Breakingসরকার

ঘাটেই নষ্ট হচ্ছে প্রধানমন্ত্রীর উপহারের নৌ-অ্যাম্বুলেন্স

নোয়াখালীর বিচ্ছিন্ন দ্বীপ উপজেলা হাতিয়ার সাড়ে সাত লাখ মানুষের জন্য প্রধানমন্ত্রীর উপহার দেওয়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের নৌ-অ্যাম্বুলেন্সটি এক বছর ধরে ঘাটে পড়ে আছে। চালক না থাকায় এমন অচলাবস্থার সৃষ্টি হয়েছে বলে জানা গেছে।

জানা গেছে, জেলা সদর বা রাজধানীর সঙ্গে যোগাযোগের একমাত্র মাধ্যম নদীপথ। দুর্গম এই দ্বীপের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে একটি নৌ-অ্যাম্বুলেন্স উপহার দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রথম এক বছর খুব ভালো সেবা দিয়েছিল নৌ-অ্যাম্বুলেন্সটি। কিন্তু সরকারিভাবে নিয়োগপ্রাপ্ত চালক, জ্বালানি তেল সরবরাহ, রক্ষাণাবেক্ষণের জন্য বাজেট বরাদ্ধ এবং বিকল হওয়া ইঞ্জিন মেরামতে যথাযথ উদ্যোগ না থাকায় অনেকটা অযত্নে এক বছর ধরে হাতিয়ার নলছিরা ঘাটে পড়ে আছে প্রধানমন্ত্রীর উপহারের নৌ-অ্যাম্বুলেন্সটি।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা যায়, কমিউনিটি ভিত্তিক হেলথ কেয়ার (সিবিএইচসি) প্রকল্পের আওতায় ২০১৯ সালের নভেম্বরে হাতিয়ায় এ নৌ-অ্যাম্বুলেন্সটি দেওয়া হয়। কিন্তু প্রথম থেকে এটি পরিচালনার জন্য কোনো চালক ছিল না। বার বার লিখিতভাবে জানানোর পরও চালক নিয়োগ দেওয়া হয়নি। পরে উপজেলা স্বাস্থ্যসেবা কমিটির সুপারিশের মাধ্যমে বেসরকারিভাবে একজন চালক ও একজন সহকারী নিয়োগ দেওয়া হয়।

বেসরকারিভাবে নিয়োগপ্রাপ্ত চালক মো. কালু (৪০)  বলেন, নতুন এই নৌ-অ্যাম্বুলেন্সটি নিয়ে রোগী পারাপারের দ্বিতীয় দিন হাতিয়া থেকে চেয়ারম্যানঘাট আসার পরপরই ইঞ্জিনের দুটি ব্যাটারি ডাউন হয়ে যায়। অনেক চেষ্টা করেও ব্যাটারি দুটি ঠিক করা যায়নি। পরে স্থানীয়ভাবে অর্থ সংগ্রহ করে দুটি নতুন ব্যাটারি কিনে নৌ-অ্যাম্বুলেন্সটি চলাচলের উপযোগী করা হয়। কিছুদিন পর আবারো ইঞ্জিনের ত্রুটি দেখা দেয়। ইঞ্জিন মেরামত করতে না পারায় এক বছর ধরে অ্যাম্বুলেন্সটি বিকল অবস্থায় পড়ে আছে।

উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. নাজিম উদ্দিন বলেন, নৌ-অ্যাম্বুলেন্সটি বরাদ্ধ দেওয়ার পর থেকে চালক নিয়োগ, রক্ষণাবেক্ষণের জন্য অর্থ বরাদ্ধ ও সর্বশেষ ইঞ্জিন মেরামত করার বিষয়ে অনেকবার অধিদফতরকে লিখিতভাবে জানানো হয়েছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত কোনো সুফল পাওয়া যায়নি।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. ইমরান হোসেন বলেন, হাতিয়া একটি বিচ্ছিন্ন দ্বীপ। অনেক সময় মুমূর্ষ রোগীকে জেলা সদরে পাঠানো হয়। এখানে প্রায় নদী উত্তাল থাকে, তখন নৌ-অ্যাম্বুলেন্স প্রয়োজন হয়। এটি সংস্কার করার বিষয়ে আমি স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবো।

এ বিষয়ে জেলা সিভিল সার্জন ডা. মাসুম ইফতেখার বলেন, নৌ-অ্যাম্বুলেন্সটি মেরামতের জন্য আমরা দুইবার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে চিঠি দিয়েছি। আমি আবারো এই বিষয়ে খোঁজ নিচ্ছি। আমরা যদি মেরামতের ফান্ড পাই তাহলে খুব দ্রুত সংস্কার করা হবে।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

17 − 10 =

Back to top button