Lead Newsদেশবাংলারাজনীতি

চসিক নির্বাচনঃ সংঘর্ষ-ভাঙচুর-গোলাগুলি, ২ জন নিহত

চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (চসিক) নির্বাচনের ভোটে সহিসংতায় দুজন নিহত হয়েছেন। আজ বুধবার সকালে ভোট শুরুর পর থেকে নগরীর বেশ কয়েকটি জায়গায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এর মধ্যে পাহাড়তলী ও খুলশীর দুই কেন্দ্রে সংঘর্ষে ২ জন নিহত হয়েছেন।

ভোট শুরুর কিছুক্ষণ পরেই পাহাড়তলীতে দুপক্ষের মধ্যকার সংঘর্ষে একজন নিহত হয়েছেন। নিহত নিজাম উদ্দিন আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী কাউন্সিলর প্রার্থী সাবের হোসেনের কর্মী বলে জানা গেছে।

নিজাম উদ্দিনকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।

এদিকে, সকাল ১০টার দিকে খুলশী ইউসেপ স্কুল কেন্দ্রে সংঘর্ষ ও গোলাগুলিতে আলাউদ্দিন আলো (২৮) নামের একজন নিহত হন।

চমেক মেডিকেল পুলিশ ফাড়ির ইনচার্জ মো. জহির গণমাধ্যমকে জানান, নগরীর খুলশী আমবাগান এলাকার ইউসেপ স্কুল কেন্দ্র থেকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় হাসপাতালে আনা হলে আলাউদ্দিন আলোর মৃত্যু হয়।

চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচনের ৩৪ নম্বর পাথরঘাটা ওয়ার্ডের ভোটকেন্দ্র ঘেরাও করে হামলা ও ইভিএম ভাঙচুর করা হয়েছে। এসময়ে সংঘর্ষের ঘটনাও ঘটে। আজ বুধবার (২৭ জানুয়ারি) পাথরঘাটা ওয়ার্ডের পাথরঘাটা বালিকা স্কুল ভোটকেন্দ্রে বিএনপি সমর্থিত কাউন্সিলর প্রার্থীরা এই হামলা চালান বলে জানা গেছে। এ ঘটনায় ৩৪ নম্বর ওয়ার্ডের ২টি কেন্দ্রের ভোটগ্রহণ স্থগিত করেছেন রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. হাসানুজ্জামান।

রিটার্নিং কর্মকর্তা জানান, জেএম সেন স্কুল ও কলেজ কেন্দ্রসহ ২ টি কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ স্থগিত করা হয়েছে।

এ ঘটনার পর ওই ওয়ার্ডের বিএনপি সমর্থিত কাউন্সিলর প্রার্থী মোহাম্মদ ইসমাইল বালীকে আটক করেছে পুলিশ। তাকে আটক করে কোতোয়ালী থানায় নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন সিএমপির অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (দক্ষিণ) পলাশ কান্তি নাথ।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বেলা ১১টার দিকে হঠাৎ কয়েকশ লোক পাথরঘাটা বালিকা স্কুল ভোটকেন্দ্র ঘেরাও করে হামলা চালান। এ সময় তারা ভেতরে ঢুকে ইভিএম ভাঙচুর করেন। ভোটকেন্দ্রে হামলা এবং ভাঙচুরের কারণে ভোটগ্রহণ বন্ধ হয়ে যায়। হামলার সময় কেন্দ্রের সামনে অপেক্ষমাণ তিনটি বাসসহ বেশ কিছু গাড়ি ভাংচুর করা হয়েছে।
ওই কেন্দ্রের প্রিজাইডিং কর্মকর্তা মো, শাহাজাহান জানান, পাথরঘাটা বালিকা স্কুল ভোটকেন্দ্রে মোট ভোটার ১ হাজার ৫৩৩ জন। সকাল থেকেই শান্তিপূর্ণভাবে ভোটগ্রহণ করা হচ্ছিলো।

তিনি বলেন, ১১টার দিকে হঠাৎ কয়েকশ লোক ভোটকেন্দ্রের চারপাশে অবস্থান নিয়ে হামলা চালান। তারা ভেতরে ঢুকে ভোটগ্রহণের কাজে ব্যবহৃত ৪টি ইভিএম এর মধ্যে ৩টি ভেঙে ফেলেন। এ সময় ভোটগ্রহণ প্রক্রিয়া বন্ধ হয়ে যায়।

পোলিং অফিসার মো. আলী আকবর জানান, ঠিকঠাক ভোট চলছিল। পাঁচশ লোক অতর্কিত হামলা চালায়। ইভিএম ভেঙে ফেলেছে। জানালার কাচ ভাঙচুর করেছে। এটি পরিকল্পিত হামলা। ১৮ বছরের চাকরি জীবনে এমন ঘটনা দেখিনি।

পাথরঘাটা ওয়ার্ডে মোট ৫ জন প্রার্থী কাউন্সিলর পদে নির্বাচন করছেন। এর মধ্যে অনুপ খাস্তগীরকে আওয়ামী লীগ সমর্থন দিয়েছে। আর মোহাম্মদ ইসমাইল বালীকে বিএনপি সমর্থন দিয়েছে।

চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মোট ভোটার সংখ্যা ১৯ লাখ ৩৮ হাজার ৭০৬ জন। এদের মধ্যে নারী ভোটার ৯ লাখ ৪৬ হাজার ৬৭৩ জন এবং পুরুষ ভোটার ৯ লাখ ৯২ হাজার ৩৩ জন।

অন্যদিকে, নগরীর লালখান বাজারে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ছাড়া অন্যদের কেন্দ্রে ঢুকতে দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির কাউন্সিলির প্রার্থী শাহ আলম। সেখানে আওয়ামী লীগ, আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী ও বিএনপির প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে ত্রিমুখী সংঘর্ষ হয়।

বুধবার সকাল ৮টা থেকে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচনের ভোটগ্রহণ শুরু হয়েছে। আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী রেজাউল করিম ও বিএনপির প্রার্থী ডা. শাহাদাত হোসেন নিজ নিজ কেন্দ্রে ভোট দিয়েছেন। 

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

one × 2 =

Back to top button