জাতীয় সংসদে হিন্দুদের জন্য সংরক্ষিত ৬০ আসন দাবি
হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করতে জাতীয় সংসদে ৬০টি সংরক্ষিত আসন ও পৃথক নির্বাচন ব্যবস্থা পুনঃপ্রতিষ্ঠার দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু মহাজোট।
গতকাল শুক্রবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনের মহাসচিব অ্যাডভোকেট গোবিন্দ চন্দ্র প্রামাণিক এ দাবি জানান।
লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, হিন্দু ধর্ম নিয়ে প্রতিনিয়ত নানা কটূক্তি ও বিদ্বেষ ছড়ানো হচ্ছে। জবাব দিতে গেলে আইসিটি অ্যাক্টে গ্রেফতার করে জেলে পাঠানো হচ্ছে। কুমিল্লা, হাজীগঞ্জ, নোয়াখালী, রংপুরসহ সাম্প্রতিককালে ঘটনার প্রতিবাদ জানাতে গিয়ে ১৭ জন হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষ ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে গ্রেফতার হয়ে জেল হাজতে আছেন। হিন্দু ধর্ম নিয়ে প্রতিনিয়ত কটূক্তি করলেও এখন পর্যন্ত হিন্দু ধর্ম অবমাননার অভিযোগে কোনো মামলা হয়নি। কাউকে গ্রেফতারও করা হয়নি। অতীতের সব ঘটনায় সরকার অপরাধীদের গ্রেফতার ও বিচার করতে ব্যর্থ হয়েছে। ফলে অপরাধীরা অপরাধ করতে আরো উৎসাহিত হচ্ছে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ একটি সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ। হিন্দু ও মুসলিমের মধ্যে প্রীতির বন্ধন বিরাজমান। গুটি কয়েক স্বার্থান্বেষী রাজনৈতিক ব্যক্তি ছাড়া দেশের বেশীরভাগ মানুষ অসাম্প্রদায়িক। কিন্তু এই দুষ্টু মানসিকতার রাজনীতিকরা বিভিন্ন সময়ে ধর্মকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করে বারবার সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর হামলা চালাচ্ছে।
দেশের ভাবমর্যাদা উজ্জ্বল ও সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করতে জাতীয় সংসদে সংরক্ষিত আসন ও পৃথক নির্বাচন ব্যবস্থা পুনর্বহাল করতে হবে। একই সঙ্গে সংখ্যালঘু মন্ত্রণালয় প্রতিষ্ঠা করে সংখ্যালঘু সমস্যার সমাধান করতে হবে।
গোবিন্দ চন্দ্র প্রামাণিক লিখিত বক্তব্যে দাবি জানিয়ে বলেন, ক্ষতিগ্রস্ত সকল মন্দির বাড়ি-ঘর পুনর্নিমাণ ও পর্যাপ্ত ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। সংখ্যালঘু সম্প্রদায় থেকে একজনকে পূর্ণমন্ত্রী নিয়োগ করতে হবে। আগামী ১৫ নভেম্বরের মধ্যে সরকারকে এসব দাবি বাস্তবায়নের সুস্পষ্ট ঘোষণা দিতে হবে। অন্যথায় হিন্দু সম্প্রদায় দেশের প্রত্যেক জেলা ও উপজেলা সদরে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করে পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা করবে।
সংবাদ সম্মেলন আরো উপস্থিত ছিলেন জোটের সিনিয়র সহ-সভাপতি অ্যাডভোকেট প্রদীপ চন্দ্র পাল, প্রধান সমন্বয়কারী বিজয় কৃষ্ণ ভট্টাচার্য, প্রেসিডিয়াম মেম্বার অভয় কুমার রায়, যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট প্রদীপ কুমার সরকার প্রমুখ।