Lead Newsজাতীয়নগরজীবনভ্রমনলাইফস্টাইল

মেট্রোরেল জার্নি: ভাড়া কত, টিকিট কাটবেন কীভাবে?

মেট্রোরেলের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের পর এতে সাধারণ মানুষের যাতায়াত শুরু হয়েছে আজ বৃহস্পতিবার থেকে। পরে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের (ডিএমটিসিএল) ফেসবুক পেজে বিভিন্ন তথ্য জানানো হয়।

প্রতি কিলোমিটার মেট্রোরেলে যেতে যাত্রীর গুণতে হবে ৫ টাকা ভাড়া। তবে যাত্রীপ্রতি সর্বনিম্ন ভাড়া ২০ টাকা। আপাতত কেবল উত্তরা থেকে আগারগাঁও স্টেশন পর্যন্ত যাওয়া-আসা করা যাবে, আর এ জন্য ভাড়া গুণতে হবে ৬০ টাকা।
যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধারা বিনা ভাড়ায় মেট্রোরেলে যাতায়াত করতে পারবেন। পাশাপাশি বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন ব্যক্তিদের জন্য থাকবে বিশেষ রেয়াতের ব্যবস্থা।

দুই ধরনের টিকিট কেটে যাতায়াত করা যাবে মেট্রোরেলের এমআরটি ৬ লাইনে। প্রথমটি একমুখী যাত্রার জন্য, দ্বিতীয়টি নিয়মিত যাত্রার জন্য। প্রতি কিলোমিটারে ভাড়া গুণতে হবে ৫ টাকা।

বিকেল ৩টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত এমআরটি পাস
ঢাকার উত্তরা উত্তর ও আগারগাঁও মেট্রো স্টেশনে বিকেল ৩টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত মিলবে এমআরটি পাস। মেট্রোরেল চালুর প্রথম দিন বৃহস্পতিবার থেকেই এই পাস বিক্রি করা হচ্ছে।
ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের (ডিএমটিসিএল) ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে আজ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় এ তথ্য জানানো হয়।
সেখানে একটি ফরমের ছবি দিয়ে বলা হয়েছে, ডিএমটিসিএল-এর ফেসবুক পেজ অথবা http://www.dmtcl.gov.bd ওয়েবসাইটে দেয়া রেজিস্ট্রেশন ফরম পূরণ করে উত্তরা উত্তর এবং আগারগাঁও স্টেশনের কাউন্টারে জমা দিতে হবে। সঙ্গে জমা দিতে হবে ৫০০ টাকা। এর কার্ডের মূল্য বাবদ ২০০ টাকা এবং ব্যবহারযোগ্য ৩০০ টাকা।
তবে সিঙ্গেল জার্নির (একক যাত্রা) টিকিট ভ্রমণের সময় (সকাল ৮টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত) এই দুই স্টেশন থেকে কেনার সুযোগ রয়েছে।

মেট্রোরেলে সাধারণ মানুষের যাতায়াত
মেট্রোরেলে সাধারণ মানুষের যাতায়াত

মেট্রোরেলের ভাড়া ও টিকিট?
মেট্রোরেলে ভাড়া ও টিকিট নিয়ে কথা বলেছেন ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম এ এন সিদ্দিকী। তিনি বলেছেন, ‘মেট্রোরেলের প্রতিটি স্টেশনে টিকিট পাওয়া যাবে। তবে পরবর্তী সময়ে এমআরটি পাস রাজধানীর বিভিন্ন দোকানে পাওয়া যাবে। যাত্রীরা সেসব জায়গা থেকে এটি সংগ্রহ করতে পারবেন।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমরা মোবাইল অপারেটরদের সঙ্গেও কথা বলছি। সেটা হলে যাত্রীরা এমআরটি পাস মোবাইল ফোনের মাধ্যমে রিচার্জ করতে পারবেন।’
আগামী স্বাধীনতা দিবস অর্থাৎ ২০২৩ সালের ২৬ মার্চ উত্তরা-আগারগাঁও রুটে পূর্ণাঙ্গরূপে শুরু হবে মেট্রোরেল সেবা। সেসময়ে যাত্রীপ্রতি স্টেশনভিত্তিক ভাড়ার হার নির্ধারণ করেছে কর্তৃপক্ষ।

ভাড়ার তালিকা
-উত্তরা নর্থ থেকে উত্তরা সেন্টার ২০ টাকা, উত্তরা সাউথ ২০ টাকা, পল্লবী ৩০ টাকা, মিরপুর-১১ নম্বর ৩০ টাকা, মিরপুর-১০ নম্বর ৪০ টাকা, কাজীপাড়া ৪০ টাকা, শেওড়াপাড়া ৫০ টাকা এবং আগারগাঁও ৬০ টাকা।
-উত্তরা সেন্টার থেকে উত্তরা নর্থ ২০ টাকা, উত্তরা সাউথ ২০ টাকা, পল্লবী ২০ টাকা, মিরপুর-১১ নম্বর ৩০ টাকা, মিরপুর-১০ নম্বর ৩০ টাকা, কাজীপাড়া ৪০ টাকা, শেওড়াপাড়া ৪০ টাকা এবং আগারগাঁও ৫০ টাকা।
-উত্তরা সাউথ থেকে উত্তরা সেন্টার ২০ টাকা, উত্তরা নর্থ ২০ টাকা, পল্লবী ২০ টাকা, মিরপুর-১১ নম্বর ২০ টাকা, মিরপুর-১০ নম্বর ৩০ টাকা, কাজীপাড়া ৩০ টাকা, শেওড়াপাড়া ৪০ টাকা এবং আগারগাঁও ৪০ টাকা।
-পল্লবী থেকে উত্তরা সাউথ ২০ টাকা, উত্তরা সেন্টার ২০ টাকা, উত্তরা নর্থ ৩০ টাকা, মিরপুর-১১ নম্বর ২০ টাকা, মিরপুর-১০ নম্বর ২০ টাকা, কাজীপাড়া ২০ টাকা, শেওড়াপাড়া ৩০ টাকা এবং আগারগাঁও ৩০ টাকা।
-মিরপুর-১১ নম্বর থেকে পল্লবী ২০ টাকা, উত্তরা সাউথ ২০ টাকা, উত্তরা সেন্টার ৩০ টাকা, উত্তরা নর্থ ৩০ টাকা, মিরপুর-১০ নম্বর ২০ টাকা, কাজীপাড়া ২০ টাকা, শেওড়াপাড়া ৩০ টাকা এবং আগারগাঁও ৩০ টাকা।
-মিরপুর-১০ নম্বর থেকে মিরপুর-১১ নম্বর ২০ টাকা, পল্লবী ২০ টাকা, উত্তরা সাউথ ৩০ টাকা, উত্তরা সেন্টার ৩০ টাকা, উত্তরা নর্থ ৪০ টাকা, কাজীপাড়া ২০ টাকা, শেওড়াপাড়া ২০ টাকা এবং আগারগাঁও ২০ টাকা।
-কাজীপাড়া থেকে মিরপুর-১০ নম্বর ২০ টাকা, মিরপুর-১১ নম্বর ২০ টাকা, পল্লবী ২০ টাকা, উত্তরা সাউথ ৩০ টাকা, উত্তরা সেন্টার ৪০ টাকা, উত্তরা নর্থ ৪০ টাকা, শেওড়াপাড়া ২০ টাকা এবং আগারগাঁও ২০ টাকা।
-শেওড়াপাড়া থেকে কাজীপাড়া ২০ টাকা, মিরপুর-১০ নম্বর ২০ টাকা, মিরপুর-১১ নম্বর ২০ টাকা, পল্লবী ৩০ টাকা, উত্তরা সাউথ ৪০ টাকা, উত্তরা সেন্টার ৪০ টাকা, উত্তরা নর্থ ৫০ টাকা এবং আগারগাঁও ২০ টাকা।
-আগারগাঁও থেকে শেওড়াপাড়া ২০ টাকা, কাজীপাড়া ২০ টাকা, মিরপুর-১০ নম্বর ২০ টাকা, মিরপুর-১১ নম্বর ৩০ টাকা, পল্লবী ৩০ টাকা, উত্তরা সাউথ ৪০ টাকা, উত্তরা সেন্টার ৫০ টাকা এবং উত্তরা নর্থ ৬০ টাকা।

টিকেট কেমন হবে?
দু’ধরনের টিকিট কেটে যাতায়াত করা যাবে মেট্রোরেলের এমআরটি ৬ লাইনে। প্রথমটি একমুখী যাত্রার জন্য, দ্বিতীয়টি নিয়মিত যাত্রার জন্য।
একমুখী যাত্রার (সিঙ্গেল জার্নি) জন্য যাত্রীকে প্রতিবার যাত্রার আগে টিকিট কাটতে হবে। যাত্রা শেষ করে টিকিট স্টেশনের স্বয়ংক্রিয় দরজায় জমা দিয়ে আসতে হবে। কারণ, এই টিকিট জমা না দিলে বেরিয়ে যাওয়ার দরজা খুলবে না।
আর নিয়মিত যাত্রীদের এমআরটি পাস পেতে একবার একটি কার্ড কিনতে হবে। টাকা শেষ হলে এই কার্ডে রিচার্জ করা যাবে। এই কার্ড যাত্রীকে স্টেশনে জমা দিতে হবে না।

যেভাবে টিকিট কাটতে হবে
মেট্রোরেলের প্রতিটা স্টেশনে এই দুই ধরনের টিকিট কাটতে পারবেন যাত্রীরা। স্টেশনের টিকিট কাউন্টারের কর্মীদের কাছ থেকে এবং টিকিট বিক্রয় মেশিনের মাধ্যমে এটি কাটা যাবে।
টিকিট বিক্রির মেশিনের মাধ্যমে টিকিট কাটতে হলে যাত্রীকে প্রথমে মনিটরে বাংলা অথবা ইংরেজি অপশন নির্বাচন করতে হবে। সিঙ্গেল ও পারমানেন্ট জার্নির জন্য টিকিট নির্বাচন করতে হবে।
এরপর আসবে গন্তব্যের তালিকা। কোন স্টেশনের কত ভাড়া সেই তালিকা দেয়া থাকবে। সেখান থেকে যাত্রীকে তার গন্তব্যের স্টেশন নির্বাচন করতে হবে। তারপর কতটি টিকিট কাটবেন সেই অপশন আসবে।
সিঙ্গেল জার্নির জন্য একজন যাত্রী একবারের যাত্রায় পাঁচটির বেশি টিকিট কাটতে পারবেন না। এরপর ওকে বাটনে চাপ দিলেই মেশিন টাকা চাইবে। টাকা দিলেই টিকিট বেরিয়ে আসবে। মেশিনে সর্বনিম্ন ২০ টাকা আর সর্বোচ্চ এক হাজার টাকা প্রবেশ করানো যাবে।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

4 × three =

Back to top button