Lead Newsনগরজীবন

ডেঙ্গু রোগীর বাসস্থান চিহ্নিত করে চালানো হবে বিশেষ অভিযানঃ স্থানীয় সরকার মন্ত্রী

 

স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী মোঃ তাজুল ইসলাম বলেছেন, এডিসসহ অন্যান্য মশার প্রাদুর্ভাব ও ডেঙ্গু রোগ নিয়ন্ত্রণে যে এলাকায় অর্থাৎ যে বাসা-বাড়িতে রোগী পাওয়া যাবে হাসপাতাল থেকে সেই ব্যক্তির নাম-ঠিকানা নিয়ে তার বাসাসহ ঐ অঞ্চল চিহ্নিত করে বিশেষ চিরুনি অভিযান চালানো হবে।

ডেঙ্গু রোগী হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার সাথে সাথে স্থানীয় সরকার বিভাগের উদ্যোগে গঠিত ‘ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণ সমন্বয় সেল’-এ এবং দুই  সিটি কর্পোরেশনে পাঠানোর জন্য স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের নির্দেশ প্রদান করেন মন্ত্রী। আজ মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে এডিস মশার প্রাদুর্ভাব ও ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় করণীয় ঠিক করতে ঢাকা দুই সিটি কর্পোরেশনের মেয়র এবং সংশ্লিষ্টদের নিয়ে ডাকা জরুরী সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

মন্ত্রী বলেন, নিয়মিত মশক নিধন অভিযানের পাশাপাশি সরকারি-বেসরকারি যে হাসপাতালেই ডেঙ্গু রোগী ভর্তি হবে তাৎক্ষণিকভাবে তাদের নাম, ঠিকানা ও মোবাইল নাম্বার আমাদের সেলে এবং সিটি কর্পোরেশনে পাঠালে ঐ ব্যক্তির বাসা-বাড়ি চিহ্নিত করে পুরো এলাকায় বিশেষ মশা নিধন কার্যক্রম পরিচালনা করা হবে।
এপ্রসঙ্গে তিনি বলেন, অভিযান চালানোর সময় সিটি কর্পোরেশনের লোকজনদেরকে বাসা-বাড়ি ঢুকতে দেওয়া হয় না বলে অভিযোগ আসে।  অনেক সময় আক্রান্ত রোগীর আসল ঠিকানা না দিয়ে ভুল তথ্য দেয়া হয়। এটি একজন সচেতন নাগরিকের কাজ হতে পারে না। কোথায় এডিস মশার লার্ভা আছে তা নাগরিককে জানালে আমরা সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নিবো। মানুষের অংশগ্রহণ ছাড়া মশা নিধন সম্ভব নয় বলেও মন্তব্য করেন মো. তাজুল ইসলাম।

মন্ত্রী বলেন, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে যে সব অঞ্চলকে এডিস মশার হটস্পট হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে অর্থাৎ যে অঞ্চল থেকে বেশি রোগী হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছে সেসব এলাকায় আগামীকাল থেকে চিরুনি অভিযান চালানো হবে।  মোবাইল কোর্ট পরিচালনার জন্য উভয় সিটি কর্পোরেশনে দশ জন করে ম্যজিস্ট্রেট নিয়োগ দেয়া হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, জেল-জরিমানা করার পরও বাসা-বাড়ি অথবা ভবনে পুনরায় দুই-তিনগুণ মশার লার্ভা পাওয়ার খবর পাওয়া যাচ্ছে। যা খুবই দুঃখজনক। ইচ্ছাকৃতভাবে মশার প্রজননস্থল ধ্বংস না করলে তাদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রীয় আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়ার কথা জানান মন্ত্রী।

মো. তাজুল ইসলাম বলেন,  ঢাকা ক্যান্টমেন্ট বোর্ড, রেলওয়ে, সিভিল এভিয়েশন এবং গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়সহ অন্যান্য সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান স্ব স্ব উদ্যোগে এডিস মশা নিধনে কার্যক্রম পরিচালনা করবে এবং প্রয়োজনে সিটি কর্পোরেশনের সহযোগিতা নিবেন।
তিনি আরো বলেন, ব্যক্তি হোক বা সরকারি-বেসরকারি যে প্রতিষ্ঠানই হোক নির্মাণাধীন, পরিত্যক্ত বা যেকোন ভবনে পানি জমিয়ে রেখে ডেঙ্গু প্রজননে ভূমিকা রাখলে তাকে শাস্তি বা জরিমানা করে জনসম্মুখে আনতে হবে । বাসা-বাড়ি, শিল্প কল-কারখানা নির্মাণ করার অধিকার সকলের আছে। কিন্তু জনগণের জান-মাল ক্ষতিগ্রস্ত করার কোন অধিকার কারোরই নেই।

অতিরিক্ত সচিবের নেতৃত্বে গঠিত ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণ সমন্বয় সেলের কাজ সম্পর্কে মন্ত্রী বলেন, সিটি কর্পোরেশন মশক নিধনে কি পরিকল্পনা তৈরি করবে এবং তা কিভাবে বাস্তবায়ন করবে, কোন এলাকায় ফগিং মেশিন দিয়ে স্প্রে করবে, কোন এলাকায় ম্যাজিস্ট্রেট অভিযান চালাবে, কোথায় লার্ভিসাইড বা এডাল্টিসাইড স্প্রে করবে তার একটা কর্মসূচি তৈরি করবে এবং প্রতিদিন পর্যালোচনা ও তদারকি করে একটি সারসংক্ষেপ তৈরি করবে।

সভায় কাউন্সিলর নেতৃত্বে এলকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ, সরকারি কর্মকর্তা, শিক্ষক, মসজিদের ইমাম, এনজিও কর্মীকে নিয়ে কমিটি করে প্রত্যেকটি ওয়ার্ডকে দশটি সাব জোনে ভাগ করে মশক নিধন অভিযান পরিচালনা করার বিষয়ে পুনরায় গুরুতারোপ করেন মো. তাজুল ইসলাম।
এসময়, পবিত্র ঈদুল আজহায় রাজধানীতে কোরবানির বর্জ্য ২৪ ঘণ্টার মধ্যে অপসারণ করার জন্য ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের মেয়রকে ধন্যবাদ জানান স্থানীয় সরকার মন্ত্রী।

সভায় ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র মোঃ আতিকুল ইসলাম, দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস, গাজীপুর সিটি করপোরেশন মেয়র জাহাঙ্গীর আলম, স্থানীয় সরকার বিভাগের সিনিয়র সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ এবং স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের প্রতিনিধিসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

2 × one =

Back to top button