ঢাকা থেকে পালাতে যে কৌশল নিয়েছিলেন সাহেদ
রাজধানীর রিজেন্ট হাসপাতালের দুই শাখায় করোনার ভুয়া রিপোর্ট দেওয়ার অভিযোগে অভিযান পরিচালনা করে র্যাপিড অ্যাকশান ব্যাটালিয়নের (র্যাব) ভ্রাম্যমাণ আদালত। তারপর থেকে হাসপাতালটির মালিক মো. সাহেদকে গ্রেপ্তারে নজরদারি বাড়ায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
এরপর রিজেন্ট গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মাসুদ পারভেজকে ঢাকা থেকে পালানোর কথা জানান সাহেদ। ম্যানেজ করতে বলেন একটি গাড়িও। তখন মাসুদ পারভেজ তার ভায়রাভাই গিয়াস উদ্দিন জালালকে এই ঘটনা জানান। পরে জালালের গাড়িতে করে ঢাকা থেকে পালিয়ে যান সাহেদ। এমনটাই দাবি করেছে র্যাব।
আজ শুক্রবার আশুলিয়া থেকে গিয়াস উদ্দিন জালাল (৬১) ও মাহমুদুল হাসানকে (৪০) গ্রেপ্তার করে র্যাব। এ সময় মো. সাহেদের ব্যবহৃত ওই গাড়ি ও ৪৮টি ব্যাংক চেকও উদ্ধার করা হয়। র্যাব বলছে, গাড়িটির মালিক জালাল আর গাড়ির চালক ছিলেন মাহমুদুল হাসান।
র্যাবের ভাষ্য অনুযায়ী, প্রথমে জালালের গাড়িতে করে ঢাকা থেকে কক্সবাজারের মহেশখালীতে যান মো. সাহেদ। কিন্তু আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ভয়ে তিনি মহেশখালী থেকে কুমিল্লা চলে আসেন। কুমিল্লায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তৎপরতা বাড়ালে সেখান থেকে পুনরায় ওই গাড়িতে চড়ে ঢাকায় ফেরেন সাহেদ। এরপর ঢাকা থেকে আরিচাঘাট পর্যন্ত জালালের গাড়িতে করেই যান তিনি। সেখানে গিয়ে আরেকটি ভাড়া করা গাড়িতে সাহেদ চলে যান সাতক্ষীরায়। আর জালাল ফিরে আসেন ঢাকায়।
আজ শুক্রবার বিকেলে র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল আশিক বিল্লাহ বলেন, সাহেদের ঢাকা ছাড়ার ব্যাপারে এসব তথ্য দেন।
আশিক বিল্লাহ বলেন, ‘মাসুদ পারভেজকে গ্রেপ্তার করার পর তার দেওয়া তথ্য অনুযায়ী মো. সাহেদকে সাতক্ষীরার সীমান্ত এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। তারপর সাহেদ এবং মাসুদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী আমরা খোঁজ পাই ওই গাড়ির, যে গাড়িতে করে ঢাকা থেকে পালিয়ে যান সাহেদ। পরে অভিযান পরিচালনা করে রাজধানীর আশুলিয়া থেকে মো. সাহেদের ব্যবহৃত ওই গাড়ি ও ৪৮টি ব্যাংক চেকসহ গিয়াস উদ্দিন জালাল ও মাহমুদুল হাসানকে গ্রেপ্তার করে র্যাব।’
আশিক বিল্লাহ বলেন, ‘গাড়িতে যে ৪৮টি চেক পাওয়া গেছে তার সবকটিতেই সাহেদের স্বাক্ষর রয়েছে। আর যে গাড়িটি জব্দ করা হয়েছে ওই গাড়িটি ঢাকা থেকে পালানোর সময় সাহেদ ব্যবহার করেছিল। গাড়িটি জালালের। আর ওই গাড়ির ড্রাইভার হচ্ছেন মাহমুদুল হাসান।’
র্যাবের গণমাধ্যম শাখার পরিচালক আরো বলেন, ‘সাধারণত সাহেদ ঢাকা থেকে অন্য কোথাও বের হওয়ার সময় নিজের ব্যক্তিগত গাড়ি ব্যবহার করতেন না। সব সময় ভাড়া করা বা অন্যের গাড়িতে করে ঢাকা ছাড়তেন। সে সময় তার সঙ্গে কোনো গানম্যানও রাখতেন না। এটা তার প্রতারণার আরেকটি কৌশল হতে পারে। তিনি সব সময় ছদ্মবেশে ঢাকা ছাড়তেন। সাহেদসহ তার প্রতিষ্ঠানের যাদেরকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে তাদেরকে নানাভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। এই ব্যাপারে আরো বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহের চেষ্টা চলছে।’ সুত্র এনটিভি অনলাইন