ঢাকায় করোনার পিক টাইম চলে গেছে: ড. বিজন
রাজধানী ঢাকায় করোনাভাইরাসের সর্বোচ্চ সংক্রমণ বা পিক টাইম পার হয়ে গেছে বলে জানিয়েছেন গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের করোনা শনাক্তকরণ র্যাপিড ডট ব্লট কিট উদ্ভাবক দলের বিজ্ঞানী ও প্রধান গবেষক ড. বিজন কুমার শীল। আজ সোমবার দেশের একটি গণমাধ্যমকে দেয়া সাক্ষাৎকারে তিনি এ কথা জানান।
ড. বিজন কুমার শীল বলেন, কোনো একটি এলাকার ওপর ভাইরাসটির সর্বোচ্চ সংক্রমণ কিংবা সর্বনিম্ন সংক্রমণ নির্ভর করে। যেমন- যুক্তরাষ্ট্রে এক প্রদেশে পিক সময় চলছে। আবার একই সময়ে অন্য প্রদেশে সংক্রমণের গতি কমছে। ঠিক তেমনি ঢাকা শহরেও করোনার পিক টাইম বা সর্বোচ্চ সংক্রমণ পার হয়ে গেছে। এখন প্রতিনিয়ত সংক্রমণ কমছে।
তিনি বলেন, বিষয়টি নিয়ে গবেষণা করেছি। সেখানে দেখা যায়, ঢাকায় ইতোমধ্যে অসংখ্য মানুষের মাঝে ইমিউনিটি বা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা চলে এসেছে। পরিবারের একজন আক্রান্ত হয়ে থাকলে, ওই পরিবারের বাকিদের মধ্যে শুধু হালকা সংক্রমণ ঘটছে। যেটাকে বলা হয়, মাইল ইনফেকশন। অর্থাৎ করোনার মৃদু উপসর্গ দেখা দেয়া। এই মুহূর্তে ঢাকায় এমন অসংখ্য মানুষ আছে।
এর ব্যাখ্যায় তিনি বলেন, ভাইরাসটির প্রাদুর্ভাবের পর থেকে এখন পর্যন্ত (৫ জুলাই পর্যন্ত) স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হটলাইনে এক কোটি ৪৭ লাখ ৬৭ হাজার ২৭৬টি ফোনকল রিসিভ করা হয়েছে। প্রত্যেকেই কিন্তু কোভিড-১৯ সাসপেক্টেড। এখন ওই কোটির সঙ্গে চার (এক পরিবারে চারজন সদস্য ধরে) দিয়ে গুণ করলে সংখ্যাটা দাঁড়ায় পাঁচ কোটি ৯০ লাখ ৬৯ হাজার ১০ জন।
আর এটাই হচ্ছে দেশে মোট আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা। তার মানে এই মানুষগুলো কিন্তু ইতোমধ্যে তাদের শরীরে অ্যান্টিবডি ডেভেলপ করেছে। তাদের মধ্যে কমবেশি সবার ইনফেকশন ছিল। যাদের আগে থেকেই শারীরিক সমস্যা ছিল, ভাইরাসটি শুধু তাদের দুর্বল করে ফেলেছে। আর যাদের সমস্যা ছিল না, তাদের সমস্যাও খুব কম হয়েছে। আবার অনেকের কোনো উপসর্গই দেখা যায়নি।
গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের এই বিজ্ঞানী বলেন, যার একবার করোনা সংক্রমণ হয়েছে, সে মাস্ক পরা শুরু করেছে। তখন তার পরিবারের সবাই মাস্ক পরেছে। এর ফলে ভাইরাসটি ট্রান্সমিশন হয়েছে ঠিকই, কিন্তু খুব কম। আর সেটা ইমিউন সিস্টেমকে স্টিমুলেট (চাঙ্গা) করেছে। ফলে অ্যান্টিবডি বেরিয়ে এসেছে। সেটা কম হোক আর বেশি হোক।
ঢাকায় করোনার পিক টাইম শূন্যে নামতে প্রায় ১০ থেকে ১১ সপ্তাহ লাগবে জানিয়ে তিনি বলেন, ঢাকা শহর সর্বোচ্চ সংক্রমণ থেকে নামছে। তবে শূন্যের কাছাকাছি যেতে আরো সময় লাগবে। যত দ্রুত সংক্রমণ বেড়েছে তার চেয়ে দ্রুত নেমে যাবে। তবে এ জন্য প্রায় ১০ থেকে ১১ সপ্তাহ লাগতে পারে।