তিস্তা ব্যারেজের সব গেট খুলে দিলো ভারত
ভারতের ছাড়া পানিতে তিস্তাবেষ্টিত লালমনিরহাট ও নীলফামারী ছাড়াও রংপুরের গঙ্গাচড়ার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হওয়ায় দেখা দিয়েছে আকস্মিক বন্যা। পানি বেড়েছে কাউনিয়া ও পীরগাছা উপজেলার তিস্তা নদীসহ ঘাঘট, যমুনেশ্বরী, ধরলাসহ ছোট নদনদীতে
নিজেদের অংশে পানিবৃদ্ধি পাওয়ার এবার তিস্তা ব্যারেজের সব গেট খুলে দিলো ভারত। প্রথমে কয়েকটি গেট খুলে দিয়ে রেকর্ড ২ লাখ ৫২ হাজার কিউসেকের বেশি পানি ছাড়ে দেশটি।
পরে সব গেট খুলে দেয়ার পর নতুন করে আরও ছাড়া হয়েছে ১ লাখ ৫৮ হাজার কিউসেক পানি। তিস্তার অরক্ষিত এলাকা দোমহনী থেকে বাংলাদেশ পর্যন্ত হলুদ সতর্কতা জারি করেছে পশ্চিমবঙ্গের সেচ দপ্তর।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, তিস্তার পানি দোয়ানি পয়েন্টে বিপৎসীমার ৬০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তিস্তা ব্যারাজের সড়কের ‘ফ্লাড বাইপাস’ ভেঙে গেছে। জারি করা হয়েছে রেড অ্যালার্ট।
লালমনিরহাটের হাতীবান্ধায় ফ্লাড বাইপাস ভেঙে যাওয়ায় বড়খাতার বাইপাস সড়কের তালেব মোড় এলাকার সড়কটিতে পানি ছুঁইছুঁই করছে। এ ভাঙনের ফলে এরই মধ্যে ওই এলাকার ২০০টি ঘরবাড়ি নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। পানির তোড়ে ভেঙে গেছে নীলফামারীর ডিমলার পূর্ব ছাতনাই ইউনিয়নের কালিগঞ্জ নামক স্থানের ৪০০ মিটার গ্রোয়েন বাঁধ। এতে নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে ৪০০ পরিবারের ঘরবাড়ি।
এদিকে রংপুরের গঙ্গাচড়াতেও দেখা দিয়েছে নদীভাঙন। আকস্মিক বন্যার পানির তোড়জোড়ে উপজেলার আলমবিদিতর, লক্ষ্মীটারি, কোলকোন্দ, নোহালী ও গজঘণ্টার নিম্নাঞ্চলে পানি ঢুকে পড়েছে। অনেক পরিবার এখন পানিবন্দি হয়ে আছে। নদীঘেঁষা চরাঞ্চলসহ নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হওয়ায় অনেকেই উঁচু জায়গায় আশ্রয় নিতে চেষ্টা করছে।
লক্ষ্মীটারি ইউনিয়নের চরইশরকুল, ইছলি, পূর্ব ইছলি, পশ্চিম ইছলি ও শংকর, বাগেরহাট, কেল্লারহাটসহ বেশকিছু নিচু এলাকায় কৃষিজমি পানিতে তলিয়ে আছে। পানিপ্রবাহ বেড়েছে শেখ হাসিনা তিস্তা সড়ক সেতুর মহিপুর পয়েন্টে।
প্রসঙ্গত, মঙ্গলবার (১৯ অক্টোবর) সকাল থেকেই পানির চাপ বাড়তে থাকে ভারতের তিস্তা অংশে। প্রথমে ২৯১৩ কিউসেক, পরে দুপুরে ৪২৩১ কিউসেক পানি ছাড়া হয়।
উত্তরাখণ্ডে কয়েকদিনের টানা বর্ষণে সৃষ্ট বন্যায় এরই মধ্যে বহু প্রাণহানি ঘটেছে। পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন বহু মানুষ। ভূমিধসের কারণে ৩ টি প্রবেশপথ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় পর্যটন জেলা নৈনিতালের সঙ্গে যোগাযোগ পুরোপুরি বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে।