ওয়েস্ট ইন্ডিজের মাটিতে হওয়া ২০০৭ সালের বিশ্বকাপের সময় ভারতের প্রায় সব খেলোয়াড়ের বাড়ির সামনেই বিক্ষোভ করেছিল সে দেশের ক্রিকেটপ্রেমীরা। অধিনায়ক রাহুল দ্রাবিড়ের বাড়ির সামনে দেয়া হয়েছিল আগুন। কেননা সেবার প্রথম রাউন্ডেই বাদ পড়েছিল শিরোপা প্রত্যাশী দলটি।
তাদের বাদ করার পেছনে সবচেয়ে বড় হাত ছিল বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের। গ্রুপপর্বের ম্যাচে রাহুল দ্রাবিড়, শচিন টেন্ডুলকার, সৌরভ গাঙ্গুলি, ভিরেন্দর শেবাগ, যুবরাজ সিং, জহির খানদের ভারতকে হারিয়ে বিশ্বকাপ থেকেই বিদায় করে দিয়েছিল বাংলাদেশ। নিজেরা প্রথমবারের মতো পেরিয়েছিল বিশ্বকাপের গ্রুপপর্ব।
পোর্ট অব স্পেনের সেই ম্যাচে শুরু থেকেই ছিল বাংলাদেশের আধিপত্য। বোলিংয়ে তরুণ মাশরাফি বিন মর্তুজা, মোহাম্মদ রফিক ও আব্দুর রাজ্জাকদের ঘূর্ণির পর ব্যাটিংয়ে তিন যুবা তামিম ইকবাল, সাকিব আল হাসান ও মুশফিকুর রহীমের কাঁধে চড়েই জয় পায় টাইগাররা।
সেই ম্যাচের প্রথম ইনিংসেই সৌরভ গাঙ্গুলি জানিয়েছিলেন, বাংলাদেশ আর ক্রিকেট শক্তিতে ছোট দেশ নেই, হয়ে গেছে অনেক বড়। তিনি এ কথাটি বলেছিলেন মুশফিকের এক কথার জবাবে। যা প্রায় তের বছর আজ (বৃহস্পতিবার) এক ফেসবুক লাইভে জানিয়েছেন মুশফিক নিজেই।
প্রসঙ্গে এসেছিল ক্রিকেট মাঠে স্লেজিংয়ের। তখন মুশফিক জানান, তিনি কখনও কাউকে সেভাবে স্লেজিং করেন না। তার ভাষ্য, ‘খেলার ভেতরে স্লেজ বলতে ওরকম কষ্ট দিয়ে আসলে কাউকে কিছু বলা হয় না। আমি এটা কখনও করি না।’
তবে কৌশলগত কারণে যে টুকটাক কথা বলা, সেটা একদমই বাদ রাখেন না মুশফিক। তেমনই এক কান্ড ঘটিয়েছিলেন ২০০৭ সালের বিশ্বকাপে ভারতের বিপক্ষে ম্যাচে। সে স্মৃতিচারণই করেছেন মুশফিক।
তিনি বলেন, ‘স্লেজিং না করলেও, কখনও কখনও কিছু কথা তো বলতেই হয়। ২০০৭ সালে একটি স্লেজিংয়ের কথা মনে আছে আমার। মজার একটা ঘটনা। (বিশ্বকাপে) আমার প্রথম ম্যাচ ছিল। সৌরভ গাঙ্গুলি তখন ব্যাটিংয়ে। ফিফটি করেছিলেন সেদিন। অনেকক্ষণ ছিলেন উইকেটে। উনি তো কলকাতার, তাই বাংলা ভালোই বোঝেন।’
‘আমাদের রাজ ভাই অথবা রফিক ভাইয়ের একজন বোলিং করছিলেন। তখন আমি তাকে বলেছিলাম, ‘দাদা, আপনি এত মারছেন কেন? আমরা আপনার ছোট ভাই না? এত মারলে হবে? একটু ছাড়-টাড় দেন। তখন গাঙ্গুলি জবাবে বললেন, না, না! তোরা আর ছোট নেই। অনেক বড় হয়ে গেছিস। তোদেরকে ছাড় দেয়া যাবে না।’
গাঙ্গুলির কথাকে সত্য প্রমাণ করে সেদিন ঠিকই বড় দলের মতো ম্যাচ জিতেছিল বাংলাদেশ। শক্তিশালী ব্যাটিং লাইন-আপ সমৃদ্ধ ভারতকে মাত্র ১৯১ রানে গুটিয়ে দিয়েছিলেন মাশরাফি-রফিকরা। পরে তিন যুবার ফিফটিতে পাঁচ উইকেটের সহজ জয়ই পেয়েছিল হাবিবুল বাশারের দল।