করোনা মোকাবিলায় জারি হওয়া লকডাউনের মধ্যেও বিশ্বের বিভিন্ন দেশে অনেকেই আবদ্ধ হচ্ছেন বিবাহ বন্ধনে। এরই মধ্যে বিশেষ নজর কেড়েছে একটি বিয়ে। করোনা সংকটকালে ত্রাণ বিতরণ করতে গিয়ে আলাপ হওয়া এক দুস্থ তরুণীর প্রেমে পড়ে তাঁকেই বিয়ে করলেন এক যুবক।
ঘটনাটি ঘটেছে ভারতের উত্তরপ্রদেশের শহর কানপুরে। দুস্থ ওই তরুণীর নাম নিলম। নিলমের বাবা মারা গেছেন অনেক বছর আগে। মা পঙ্গু অবস্থায় শয্যাশায়ী। ভাই-ভাবি নিলমকে প্রায়ই মারধর করত। এক রাতে নিলম ও তাঁর মাকে বাড়ি থেকেই বের করে দেয় তারা। মা-মেয়ে এরপর খোলা রাস্তার পাশেই কোনোমতে দিনাতিপাত করতেন।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইন্ডিয়ার এক প্রতিবেদনে থেকে জানা যায়, কানপুরে ভিক্ষা করে দিন পার করতেন তরুণী নিলম। অসুস্থ মায়ের জন্য খাবার ও ওষুধের ব্যবস্থা করতে ভিক্ষা করা ছাড়া আর কোনো উপায় ছিল না তাঁর। কিন্তু, পরিস্থিতি অত্যন্ত জটিল হয়ে গেল লকডাউন জারি হওয়ার কারণে। রাস্তায় লোকজন না থাকলে ভিক্ষা দেবে কে?
এ সময়েই পেশায় গাড়িচালক অনীলের দৃশ্যপটে আগমন। গাড়ির মালিকের সঙ্গে ত্রাণ বিতরণ করতে যেতেন অনীল। সে সময়েই তাঁর আলাপ হয় নিলমের সঙ্গে। লকডাউনের সময়টায় বেশ ভালো বন্ধুত্ব গড়ে ওঠে অনীল ও নিলমের মধ্যে। বিষয়টি নজরে আসে অনিলের মনিব ললতা প্রসাদের।
পেশায় সম্পত্তির কারবারি ললতা এ নিয়ে কথা বলেন অনীলের সঙ্গে। নিলমকে বিয়ে করতে রাজিই ছিলেন অনীল। মনিবকে সেই কথা জানাতেও দ্বিধা করেননি। আর নিলম ও তাঁর মায়ের পক্ষ থেকেও কোনো আপত্তি ছিল না। কিন্তু বড় চ্যালেঞ্জ ছিল অনিলের বাবাকে এ বিয়ের ব্যাপারে রাজি করানো। অবশ্য সে কাজ সমাধা করে ফেলেন অনিলের মালিক ললতা প্রসাদ।
শেষ পর্যন্ত দুই পক্ষের মত নিয়েই বিয়ের আয়োজন করা হয়। কানপুরে একটি বৌদ্ধ মন্দিরে নিলম-অনীলের বিয়ের ব্যবস্থা করা হয়। সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখেই সব আয়োজন করা হয়।