আন্তর্জাতিক

থানটলাঙ শহর ধ্বংস করে দিয়েছে মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী

মিয়ানমারের পশ্চিমাঞ্চলীয় চিন রাজ্যে সামরিক বাহিনীর গোলা বর্ষণে একটি শহর ধ্বংস হয়ে গেছে।

শুক্রবার স্থানীয় সংবাদমাধ্যম খিত ঠিত মিডিয়া ও চিনডউইন নিউজ এজেন্সি প্রত্যক্ষদর্শীদের সূত্রে এই খবর প্রকাশ করা হয়।

থানটলাঙ নামের এই শহরের স্থানীয় জান্তাবিরোধী বিদ্রোহী বাহিনীর সাথে সামরিক বাহিনীর সংঘর্ষের সময় এই গোলা বর্ষণ করা হয়।

শহরের এক বাসিন্দা জানান, শুক্রবার স্থানীয় জান্তাবিরোধী বিদ্রোহীরা এক সৈন্যকে বন্দী করে। পরে সামরিক বাহিনী ওই শহরের ওপর গোলা বর্ষণ শুরু করে।

সংবাদমাধ্যম দুটি জানায়, সামরিক বাহিনীর হামলায় শহরের ১৬৩টি বাড়ি ও দুইটি গির্জা ধ্বংস হয়ে গিয়েছে।

এদিকে শিশুদের জন্য আন্তর্জাতিক এনজিও সংস্থা সেভ দ্য চিলড্রেন এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, গোলা বর্ষণে শহরে তাদের কার্যালয় ধ্বংস হয়ে গিয়েছে এবং ১০ কর্মীর সকলেই শহর ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন।

বিবৃতিতে আরো বলা হয়, ‘সহিংসতার কারণে সৃষ্ট এই ধ্বংসযজ্ঞ সম্পূর্ণ অর্থহীন। সাম্প্রতিক কয়েক সপ্তাহে সহিংস সংঘর্ষ থেকে বাঁচতে জনগণ ইতোমধ্যেই তাদের বাড়িঘর ছেড়ে পালিয়েছে। অনেকের সামান্য জমা সম্পদও ধ্বংস হয়েছে।’

থানটলাঙ শহরে প্রায় ১০ হাজার লোকের আবাস ছিলো। কিন্তু সম্প্রতি সামরিক বাহিনীর চিন রাজ্যে হামলার কারণে শহরটির বাসিন্দারা নিজেদের আবাস ছেড়ে নিরাপদ আশ্রয়ে সন্ধানে চলে গেছে।

১ ফেব্রুয়ারি মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী তাতমাদাও দেশটিতে সেনা অভ্যুত্থান ঘটায় এবং প্রেসিডেন্ট উইন মিন্ট ও স্টেট কাউন্সিলর অং সান সু চিসহ রাজনৈতিক নেতাদের গ্রেফতার করে। সাথে সাথে দেশটিতে এক বছরের জন্য জরুরি অবস্থা জারি করা হয়। পরে ১ আগস্ট জরুরি অবস্থার মেয়াদ ২০২৩ সালের আগস্ট পর্যন্ত বাড়ানোর ঘোষণা দেন জান্তা প্রধান জেনারেল মিন অং লাইং।

গত বছরের নভেম্বরে দেশটিতে অনুষ্ঠিত নির্বাচনের ফলাফল নিয়ে বিতর্কের জেরে এই অভ্যুত্থান ঘটায় সামরিক বাহিনী।

সেনা অভ্যুত্থানের প্রতিবাদে ৬ ফেব্রুয়ারি থেকে মিয়ানমারের বিভিন্ন শহরেই বিক্ষোভ শুরু হয়। বিক্ষোভকারীরা অং সান সু চিসহ বন্দী রাজনৈতিক নেতাদের মুক্তির পাশাপাশি সামরিক শাসন প্রত্যাহারের দাবি জানিয়ে আসছেন। শান্তিপূর্ণভাবে শুরু হওয়া অহিংস বিক্ষোভকে
সামরিক উপায়ে জান্তা সরকার দমন করতে গেলে বিক্ষোভকারীরাও বিভিন্ন স্থানে অস্ত্র হাতে নেয়।

গত ৭ সেপ্টেম্বর মিয়ানমারের জান্তাবিরোধী ন্যাশনাল ইউনিটি গভর্নমেন্ট দেশের সাধারণ মানুষকে সামরিক জান্তার আক্রমণ থেকে রক্ষা করতে সর্বাত্মক যুদ্ধের ঘোষণা দেয়।

১ ফেব্রুয়ারি থেকে জান্তাবিরোধী বিক্ষোভ ও সশস্ত্র তৎপরতায় সামরিক ও নিরাপত্তা বাহিনীর সাথে সংঘর্ষে মিয়ানমারে এক হাজারের বেশি
বিক্ষোভকারী ও বিদ্রোহী নিহত হয়েছে বলে দেশটিতে মানবাধিকার নজরদারি করা সংস্থাগুলো জানায়।

অপরদিকে সামরিক বাহিনী নিহতের এই সংখ্যা অস্বীকার করে আসছে এবং সংঘর্ষে বিপুল সৈন্য নিহত হওয়ার কথা জানিয়েছে।

সূত্র : আলজাজিরা

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

15 − thirteen =

Back to top button