Lead Newsঅপরাধ ও দূর্ঘটনা

দ্বিতীয় দিনের মতো দুদকে স্বাস্থ্যের সাবেক ডিজি

রিজেন্ট হাসপাতাল নিয়ে অনিয়ম ও জালিয়াতির ঘটনায় জবাব দিতে দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) গেছেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সাবেক মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল কালাম আজাদ। আজ বৃহস্পতিবার সকালে তিনি রাজধানীর সেগুনবাগিচায় দুদকের প্রধান কার্যালয়ে যান।

এর আগে গতকাল বুধবার সকালে নভেল করোনাভাইরাস মোকাবিলায় সরকারের মাস্ক-পিপিই ক্রয়ে কেলেঙ্কারির ঘটনায় জবাব দিতে দুদকে যান ডা. আবুল কালাম আজাদ।

দুটি অভিযোগ অনুসন্ধানে বক্তব্য নেওয়ার জন্য গত ৬ আগস্ট আবুল কালাম আজাদকে তলব করেছিল দুদক। তলবের চিঠিতে আবুল কালাম আজাদকে ১২ ও ১৩ আগস্ট হাজির হতে বলা হয়।

গতকাল বিকেল ৩টার দিকে দুদক কার্যালয় থেকে বেরিয়ে ডা. আবুল কালাম আজাদ সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমি সুস্পষ্টভাবে বলতে চাই, মাস্ক ক্রয়ে কেউ অপরাধ করলে তার কঠোর শাস্তি হোক এটা আমিও চাই। এবং এ বিষয়ে দুদককে তদন্তে আমি সকল সহযোগিতা করব।’

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সাবেক এ মহাপরিচালক বলেন, ‘আপনারা সকলে জানেন, আমি ২০১৬ সাল থেকে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছি। আমি লক্ষ করছিলাম; আমাকে নিয়ে অপপ্রচার শুরু হয়েছে। পদে থাকা আমার কাছে সম্মানের বিষয় নয়। তাই বিবেক তাড়িত হয়ে গত ২১ জুলাই স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করে দৃষ্টান্ত স্থাপন করি। কোভিডের সময় মাস্ক ক্রয়ে দুর্নীতির বিষয়ে আমি কী জানি, সেটা জানাতে আমাকে আসার অনুরোধ করেছিল দুদক। আমি এ বিষয়ে যা যা জানি, তার সবই দুদককে বলেছি। এ মুহূর্তে তদন্তাধীন বিষয় সর্ম্পকে এর চেয়ে বেশি আর কিছু বলা সম্ভব নয়।’

ডা. আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘আমি একজন সৎ, দক্ষ, নিষ্ঠাবান, কর্মঠ, নিরহংকার কর্মকর্তা হিসেবে সারাজীবন কাজ করেছি। আমি অতি সজ্জন ব্যক্তি হিসেবে পরিচিত ছিলাম। কোভিডের মতো ভয়ংকর দুর্যোগে লঅখ লাখ মানুষের জীবন বাঁচাতে নিজ দায়িত্ববোধ থেকে সার্বক্ষণিক কাজ করেছি। আমি নিজেও আক্রান্ত হয়েছি। মহান রাব্বুল আলামিনের কৃপায় ২০ দিন পর মৃত্যুর দুয়ার থেকে সুস্থ হয়ে ফিরে এসেছি। এ জন্য ডাক্তার, নার্স, সাংবাদিকদের সবার কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।’

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সাবেক ডিজি আরো বলেন, ‘স্বাস্থ্য খাতে অনিয়ম নিয়ে বিতর্ক শুরু হওয়ার পর আমি নিজেই দায়িত্ব নিয়ে পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছি। মাস্ক কেলেঙ্কারির ঘটনায় কেউ অপরাধ করলে সে শাস্তির মুখোমুখি হবেন আমিও সেটা চাই।

এরপর ডা. আবুল কালাম আজাদ আর কোনো প্রশ্নের উত্তর না দিয়ে বিকেল সোয়া ৩টার দিকে দুদক কার্যালয় থেকে বেরিয়ে যান। রিজেন্ট হাসপাতালের দুর্নীতি নিয়ে বক্তব্য দিতে তিনি আজ  দুদক কার্যালয়ে আসেন।

সমালোচনার মুখে ডা. আবুল কালাম আজাদ গত ২১ জুলাই জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের পদ থেকে পদত্যাগপত্র জমা দেন। প্রক্রিয়া শেষে ২২ জুলাই তাঁর পদত্যাগপত্র গ্রহণ করা হয়। পরের দিন ২৩ জুলাই স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নতুন ডিজি হিসেবে নিয়োগ পান ঢাকা মেডিকেল কলেজের সার্জারি বিভাগের অধ্যাপক ডা. আবুল বাশার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম।

দেশে করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব শুরুর পর মাস্ক ও পিপিই নিয়ে নানা অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগের প্রতিবেদন আসতে থাকে গণমাধ্যমে। এর মধ্যেই দেশজুড়ে আলোচনায় আসে রিজেন্ট হাসপাতাল ও জেকেজি হেলথ কেয়ারের মতো প্রতিষ্ঠানের করোনা পরীক্ষা নিয়ে ভুয়া রিপোর্ট প্রদানের বিষয়টি।

একপর্যায়ে অনুমোদনহীন রিজেন্ট হাসপাতালের সঙ্গে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের চুক্তির বিষয়টি নিয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে ডিজি ডা. আবুল কালাম আজাদকে কারণ দর্শানোর নোটিশও (শোকজ) দেওয়া হয়। এর জের ধরে পদত্যাগপত্র জমা দেওয়ার পর আবুল কালাম আজাদের চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ বাতিল করে প্রজ্ঞাপন জারি করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

eleven − four =

Back to top button