কূটনীতিজাতীয়

দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে বাংলাদেশ-মালদ্বীপের মধ্যে চারটি সমঝোতা স্মারক সই

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম মোহাম্মেদ সোলিহ এর মধ্যে অনুষ্ঠিত দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে ৪টি সমঝোতা স্মারক সই হয়েছে।

বৃহস্পতিবার বেলা ১১টার পর প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে এ বৈঠক হয়।

এর আগে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষ্যে বাংলাদেশ সফররত মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট বৃহস্পতিবার বেলা ১১টায় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে পৌঁছালে তাকে স্বাগত জানান শেখ হাসিনা। এরপর দ্বিপক্ষীয় বৈঠক শুরুর আগে দুই সরকার প্রধানের মধ্যে একান্ত বৈঠক হয়। পরে তাদের উপস্থিতিতে ৪ টি সমঝোতা স্মারক সই হয়।

এরমধ্যে পারস্পরিক সহযোগিতার জন্য যৌথ কমিশনের বিষয়ে একটি সমঝোতা স্মারক ছিল। তাতে স্বাক্ষর করেন বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেন ও মালদ্বীপের পররাষ্টমন্ত্রী আবদুল্লাহ শহিদ। দ্বিপক্ষীয় ফরেন অফিস কনসাল্টিংয়ের জন্য সমঝোতা স্মারক সই হয়। এতে দুই দেশের পররাষ্ট্র সচিব স্বাক্ষর করেন।

মৎস্য ও পেলেজিক ফিশিংয়ের ক্ষেত্রে সহযোগিতার বিষয়ে সমঝোতা স্মারক সই হয়। এতে বাংলাদেশের মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী ও মালদ্বীপের অর্থনৈতিক উন্নয়ন মন্ত্রী স্বাক্ষর করেন। পাশাপাশি ২০২২-২০২৫ পর্যন্ত সাংস্কৃতিক বিনিময়ে সহযোগিতার জন্য সমঝোতা স্মারক সই হয়। এতে বাংলাদেশের সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ হাসান ও ও মালদ্বীপের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবদুল্লাহ শহিদ সই করেন।

এদিকে আজ সন্ধ্যায় বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাত করবেন মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট। পরে বঙ্গভবনে তিনি রাষ্ট্রীয় ভোজসভায় যোগ দেবেন এবং সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান উপভোগ করবেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনারও ভোজসভায়ও যোগ দেওয়ার কথা রয়েছে। এরপর বৃহস্পতিবার রাতেই দেশে ফিরবেন মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট।

এর আগে, গতকাল বুধবার দুই দিনের সফরে ঢাকায় পৌঁছান মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম মোহাম্মেদ সোলিহ। ঢাকায় পৌঁছানোর পর সাভার জাতীয় স্মৃতিসৌধ এবং ধানমন্ডির ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান মালদ্বীপের রাষ্ট্রপতি। এরপর বিকেলে জাতীয় প্যারেড গ্রাউন্ডে আয়োজিত রাষ্ট্রীয় অনুষ্ঠানে যোগ দেন ইব্রাহিম মোহামেদ সোলিহ।

সফরসূচি অনুযায়ী, আজ সন্ধ্যায় বঙ্গভবনে যাবেন সলিহ। সেখানে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের সঙ্গে সলিহ বৈঠক করবেন। পরে তাঁর সম্মানে বঙ্গভবনে একটি রাষ্ট্রীয় ভোজে যোগ দেবেন তিনি। সেখানে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান উপভোগ করবেন। সফর শেষে আজ রাতেই দেশে ফিরে যাবেন মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট।

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মবার্ষিকী ও বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদ্‌যাপনের অনুষ্ঠানে অংশ নিতে প্রথম বিশ্বনেতা হিসেবে গতকাল বুধবার সকালে ঢাকায় আসেন মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট।

ঢাকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে মালদ্বীপের প্রেসিডেন্টকে স্বাগত জানান রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ। বিমানবন্দরে সলিহকে লালগালিচা সংবর্ধনা দেওয়া হয়। তিন বাহিনীর সুসজ্জিত একটি দল তাঁকে গার্ড অব অনার প্রদান করে। পরে মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধে মুক্তিযুদ্ধের বীর শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট। জাতীয় স্মৃতিসৌধ থেকে তিনি যান রাজধানীর ধানমন্ডির ৩২ নম্বরে। বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘর প্রাঙ্গণে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা জানান মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট। এ ছাড়া তিনি বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘর ঘুরে দেখেন। পরিদর্শন বইতে স্বাক্ষর করেন। এ সময় বঙ্গবন্ধুর ছোট কন্যা শেখ রেহানা উপস্থিত ছিলেন।

বুধবার বিকেলে রাজধানীর জাতীয় প্যারেড স্কয়ারে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মবার্ষিকী ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদ্‌যাপন উপলক্ষে ‘মুজিব চিরন্তন’ শিরোনামে ১০ দিনের অনুষ্ঠানের প্রথম দিনের অনুষ্ঠানে যোগ দেন মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম মোহাম্মদ সলিহ। এই অনুষ্ঠানে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ। সভাপতিত্ব করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

অনুষ্ঠানে সম্মানিত অতিথির বক্তৃতায় মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম মোহাম্মদ সলিহ বলেন, বঙ্গবন্ধু দক্ষিণ এশিয়ার ইতিহাসের এক মহান ব্যক্তিত্ব। গণতন্ত্র আর মুক্তিকামী মানুষের হৃদয়ে সব সময় সম্মানের আসনে থাকবেন তিনি। বঙ্গবন্ধুর ছয় দফা ছিল বাংলাদেশের স্বাধীনতার ভিত্তি। তাঁর ৭ মার্চের ভাষণ বাংলাদেশকে স্বাধীনতার পথে নিয়ে গেছে। ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য প্রেরণা হিসেবে থাকবেন বঙ্গবন্ধু।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

2 × 2 =

Back to top button