ইলিশের প্রধান প্রজনন মৌসুমে মা ইলিশ রক্ষায় চাঁদপুরের পদ্মা-মেঘনায় ইলিশ ধরায় আরোপিত নিষেধাজ্ঞা শেষ হচ্ছে বুধবার রাত ১২টায়। ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষে আজ মধ্যরাত থেকে চাঁদপুরের পদ্মা-মেঘনায় ইলিশ আহরণ নামছে জেলেরা।
গত ১৪ অক্টোবর থেকে আজ ৪ নভেম্বর রাত ১২টা পর্যন্ত ২২দিন চাঁদপুরের পদ্মা-মেঘনাসহ সারাদেশের ছয়টি অভয়াশ্রম এলাকায় ইলিশসহ সকল ধরনের মাছ ধরার নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। এই নিষেধাজ্ঞার সময় ইলিশ আহরণ, পরিবহন, বাজারজাতকরণ, মজুত ও ক্রয়-বিক্রয় সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছেন সরকার।
নিষেধাজ্ঞার সময় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নদীতে অভিযান চালিয়ে প্রায় ৬ হাজার কেজি ইলিশ ও ৭ কোটি মিটার জাল জব্দ করেছে। ৫শতাধিক নৌকা আগুনে পুড়িয়ে এবং পানিতে ডুবিয়ে বিনষ্ট করা হয়েছে। এছাড়া নিষেধাজ্ঞা অমান্য করায় দুই শতাধিক জেলের জেল-জরিমানা করা হয়েছে। আর জরিমানা আদায় করা হয়েছে দুই লক্ষাধিক টাকা।
চাঁদপুর জেলার মতলব উত্তর উপজেলার ষাটনল থেকে লক্ষ্মীপুর জেলার চর আলেকজান্ডার পর্যন্ত ১০০ কিলোমিটার নদী উপকূলীয় এলাকায় আজ মধ্যরাত থেকে শুরু হবে জেলেদের মাছ ধরার উৎসব। এখন নদীর বুক জুড়ে থাকবে শুধু জেলে আর নৌকা। আবারও সরগরম হয়ে উঠবে জেলেপাড়া। দূরদূরান্ত থেকে ক্রেতারা ইলিশের বাড়ি চাঁদপুরে আসবে তাজা ইলিশ কিনতে। আবারও ইলিশ ক্রেতাদের ভিড়ে মুখরিত হয়ে উঠবে দেশের সর্ববৃহৎ ইলিশের আড়ৎ চাঁদপুরে। চাঁদপুরের অর্ধশত জেলে আজ মধ্যরাত থেকেই তাদের নৌকা ও জাল নিয়ে নদীতে নামবে।
চাঁদপুরে ৫১ হাজার ১৯০ জন জেলে আছে। এদের মধ্যে ৫০ হাজার জেলের জন্য সরকার নিষেধাজ্ঞার সময় ২০ কেজি করে চাল বরাদ্দ দিয়েছে। এ চালে তাদের সংসার চালানোর যাবে না বলেও দাবি করেন জেলেরা। অনেক জেলে দাবি করেছে তারা পুরো ২০ কেজি চাল পায়নি। পেয়েছে ১৬ থেকে ১৭ কেজি করে। আবার অনেকেই একেবারেই চাল পায়নি।
বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইন্সটিটিউট নদীকেন্দ্র, চাঁদপুরের ইলিশ গবেষক ও বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মো. আনিছুর রহমান জানান, আমাদের দেশের জেলেদেরকে যে ২২দিন নিষেধাজ্ঞার সময়ে দেয়া হয়েছে এবং তারা সরকারের সেই আইন মেনে নদীতে মাছ ধরা থেকে বিরত থেকেছে। পক্ষান্তরে পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত থেকে জেলেরা এসে কোনো নিয়ম নীতি না মেনে আইন অমান্য করে এই নিষেধাজ্ঞার সময়ে আমাদের দেশের জলসীমায় এসে মাছ ধরে নিয়ে যায়।