প্রকৃতিতে শীতের আগমনী বার্তা
প্রকৃতিতে ভোরের ঘাসে শিশিরের উপস্থিতি আর সকালের সোনা রোদ জানান দিচ্ছে শীতের আগমন। কার্তিক আর অগ্রহায়ণ এ দুই মাস নিয়ে হেমন্তকাল। চলে আসছে উত্তর-পশ্চিম ও উত্তর-পূর্ব মৌসুমী বায়ু। ফলে দিন ও রাতের তাপমাত্রা কমছে। হেমন্তের এই সময়ে এসে আসি আসি করছে শীত। ইতোমধ্যে পড়তে শুরু করেছে কুয়াশাও। শহরতলী এবং গ্রামাঞ্চলে শীতের আগমনী শুরু হলেও শহরে আসেনি এখনও।
আমাদের ষড়ঋতুর দেশে হেমন্ত মানেই শীতের আগমনী বার্তা। চায়ের পাতায় কিংবা লাউয়ের ডগায় শিশির ভেজা ও কুয়াশা জানান দিচ্ছে- শীত আসছে। বড় শহর বা মহানগরীর দালান কোঠায় শীতের পরশ পড়তে একটু দেরি হলেও চায়ের রাজধানী শ্রীমঙ্গলে এরইমধ্যে দেখা মিলছে কুয়াশার। শুরু হয়েছে এখানকার প্রকৃতিতে হেমন্তের হিম হিম হাওয়া। সূর্যোদয়ের আগে দেখা যায় ঘাস ভেজা শিশিরে।
এখানের রোদের নরম রঙ শিশুর গালের মতোই লাল। সবুজের সমারোহ রূপসী বাংলায় হেমন্তের এই চিরায়ত রূপের কথা বারবার এসেছে কবিদের কবিতায়। ‘ওগো শীত, ওগো শুভ্র, হে তীব্র নির্মম, তোমার উত্তরবায়ু দুরন্ত দুর্দম অরণ্যের বক্ষ হানে। বনস্পতি যত থর থর কম্পমান, শীর্ষ করি নত আদেশ-নির্ঘোষ তব মানে। জীর্ণতার মোহবন্ধ ছিন্ন করো এ বাক্য তোমার ফিরিছে প্রচার করি জয়ডঙ্কা তব দিকে দিকে’।
হেমন্ত মানেই শীতের আগমনী। শিশিরভেজা ঘাস, ভোরে ও সন্ধ্যায় কুয়াশার চাদরে ঢাকা প্রকৃতি। শীতের আগাম সবজির খেতে কৃষকের ব্যস্ততা। আলমিরায় বন্দি থাকা গরম কাপড়গুলো আলনায় স্থান দেওয়াসহ আরও কত কি।
শীতের রাজ্য শ্রীমঙ্গলের সাধারণ মানুষ বলছেন, হেমন্ত মানে শীত শীত ভাব, ঠান্ডা বাতাস, শীতল প্রকৃতি। শেষ রাতের দিকে ঠান্ডা লাগে, পরে হয়তো হালকা কম্বল বা চাদর গায়ে মুড়ে দেই।
গ্রাম-বাংলার সরল-সাদামাটা মানুষেরা বলছে, অপ্রাপ্তি আর দুঃখবেদনা যতই থাকুক, হেমন্ত এলে প্রকৃতির মতোই তাদের জীবনেও নেমে আসে এক শীতলতা, এ যেন এক অন্যরকম অনুভূতি তৈরি করে হৃদয়ে।