প্রথম দিনেই মুসলিম দেশের নিষেধাজ্ঞা বাতিলের নির্বাহী আদেশে বাইডেনের স্বাক্ষর
নবনির্বাচিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেওয়ার পর প্রথমদিনই ১৫টি নির্বাহী আদেশে স্বাক্ষর করেছেন জো বাইডেন। এর মধ্যে অন্যতম হলো ‘মুসলিম নিষেধাজ্ঞা’ প্রত্যাহার। সংবাদমাধ্যম ডয়েচে ভেলে আজ বৃহস্পতিবার এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে।
এর আগে ১৩টি মুসলিম দেশের ওপর ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। এমন সিদ্ধান্তে নিন্দার ঝড় বয়ে যায় বিশ্বজুড়ে। ট্রাম্পের নিষেধাজ্ঞার কবলে পড়ে ইরান, লিবিয়া, সোমালিয়া, সিরিয়া, ইয়েমেনসহ আরো কয়েকটি দেশ।
ট্রাম্প দাবি করেছিলেন, সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য এমন পদক্ষেপ নিয়েছেন তিনি।
তবে জো বাইডেন ক্ষমতা গ্রহণের প্রথমদিনই ‘মুসলিম নিষেধাজ্ঞা’ বাতিলের জন্যে নির্বাহী আদেশে স্বাক্ষর করেছেন।
এ ছাড়া বাইডেন যেসব নির্বাহী আদেশে সই করেছেন সেগুলোর মধ্যে অন্যতম করোনা মোকাবিলায় ফেডারেল এলাকা ও ফেডারেল কর্মীদের জন্য মাস্ক পরায় বাধ্যবাধকতা ও শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখা, নতুন অভিবাসন নীতি, প্যারিস জলবায়ু চুক্তিতে ফিরে আসা ও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থায় (ডব্লিউএইচও) পুনরায় যোগ দেওয়া।
ক্ষমতাগ্রহণের আগে থেকেই করোনা মোকাবিলায় ট্রাম্প প্রশাসনের চেয়ে কার্যকরী পদক্ষেপ নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে আসছিলেন বাইডেন। এরই অংশ হিসেবে মহামারিতে বিভিন্ন কাজ সমন্বিত করার জন্য একটি কার্যালয় করবে বাইডেন প্রশাসন। এ ছাড়া ডব্লিউএইচও থেকে যুক্তরাষ্ট্রের সরে আসার বিষয়ে ট্রাম্প প্রশাসনের পদক্ষেপ বাতিল করছেন বাইডেন। ফলে পুনরায় ডব্লিউএইচওর সঙ্গে যোগ দিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র।
এ ছাড়া জলবায়ু পরিবর্তনের বিষয়টিয়ে অনেক গুরুত্ব দিচ্ছে বাইডেন প্রশাসন। আর সেজন্যই প্যারিস জলবায়ু চুক্তিতে যুক্তরাষ্ট্রের ফিরে যাওয়ার পদক্ষেপ নিয়েছেন বাইডেন। এর আগে প্যারিস জলবায়ু চুক্তি থেকে সরে এসেছিল ট্রাম্প প্রশাসন।
স্থানীয় সময় গতকাল বুধবার দুপুরে যুক্তরাষ্ট্রের সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি জন রবার্টসের কাছে শপথবাক্য পাঠ করেন প্রেসিডেন্ট বাইডেন। আর ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিস শপথ নিয়েছেন বিচারপতি সোনিয়া সোটোমেওরের কাছে। সংবাদমাধ্যম সিএনএন ও এনবিসি এ খবর জানিয়েছে।
নজিরবিহীন নিরাপত্তার মধ্যে এই শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠান হয়। প্রথা ভেঙে নতুন প্রেসিডেন্টের অভিষেক অনুষ্ঠানে যোগ দেননি বিদায়ী ডোনাল্ড ট্রাম্প। শপথের আগেই হোয়াইট হাউস ছেড়ে ফ্লোরিডায় পাড়ি জমান তিনি।
শপথ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা, বিল ক্লিনটন ও জর্জ ডব্লিউ বুশ। তাঁদের সঙ্গে ছিলেন সাবেক ফার্স্ট লেডি মিশেল ওবামা ও সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি ক্লিনটন। ট্রাম্প না থাকলেও বাইডেনের অভিষেক অনুষ্ঠানে যোগ দেন ডোনাল্ড ট্রাম্পের ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্স।
শপথ নেওয়ার পর প্রেসিডেন্ট হিসেবে প্রথম ভাষণে বাইডেন যুক্তরাষ্ট্রের জনগণকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান। বাইডেন বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে বিভক্তিকে ছাপিয়ে সব সময় ঐক্যের জয় হয়েছে।