প্রয়োজনে স্বাস্থ্য গবেষণার জন্য ৫০০ কোটি টাকা বরাদ্দ
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ বলেছেন, আগামী অক্টোবর মাসে বিএসএমএমইউতে গবেষণা দিবস ও গবেষণা মেলা অনুষ্ঠিত হবে। এ দিবসের মেলায় বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব কী কী গবেষণা হয়েছে তা তুলে ধরা হবে। উন্নতমানের গবেষণাসহ সকল গবেষণা কার্যক্রম সম্পর্কে গণমাধ্যম কর্মীরা বিস্তারিত জানতে পারবেন।
চিকিৎসা ক্ষেত্রে গবেষণার জন্য নতুন অর্থবছরের বাজেটে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ে ১০০ কোটি টাকা বরাদ্দ রেখেছেন বলে জানান উপাচার্য।
তিনি বলেন, বিএসএমএমইউ চিকিৎসক গবেষকরা বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণা ফান্ড ছাড়াও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বরাদ্দকৃত অর্থ থেকে গবেষণার জন্য আবেদন করেছেন। প্রধানমন্ত্রী গবেষণার জন্য প্রয়োজনে ৫০০ কোটি টাকা বরাদ্দ দেবেন বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
বৃহস্পতিবার (৮ জুলাই) বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে দায়িত্ব গ্রহণের প্রথম ১০০ দিনের কার্যক্রম বিষয়ে নিউজলেটার প্রকাশনা অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন ডা. শারফুদ্দিন আহমেদ। গত ২৯ মার্চ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হিসেবে তিনি দায়িত্বভার গ্রহণ করেন।
দায়িত্ব গ্রহণের প্রথমদিন থেকে করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলায় তিনি তার সাধ্যের সর্বোচ্চ ব্যবহার করছেন মন্তব্য করে উপাচার্য বলেন, দায়িত্বভার গ্রহণের পর কেবিন ব্লকের করোনা সেন্টারের সাধারণ শয্যা সংখ্যা ও আইসিইউ সংখ্যা বৃদ্ধি করা হয়েছে। সি ব্লকে নন-কোভিড রোগীদের জন্য আইসিইউ ইউনিট ও বাংলাদেশ বেতার ভবনে করোনা ইউনিট চালু করা হয়েছে।
করোনাভাইরাসের সঙ্গে মিউকরমাইকোসিস বা ব্ল্যাক ফাঙ্গাসের সংক্রমণ দেখা দেয়ার পর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে ব্ল্যাক ফাঙ্গাস ইউনিট চালু করা হয়েছে।
এ ইউনিটে মরণঘাতী এই ফাঙ্গাসে আক্রান্ত দুইজন রোগী ইতোমধ্যে চিকিৎসার মাধ্যমে আরোগ্য লাভ করেছেন। এছাড়াও বেতার ভবনে করোনা শনাক্তকরণের জন্য পরীক্ষা কার্যক্রম চালু রয়েছে।
বিএসএমএমইউ উপাচার্য আরও বলেন, একাডেমিক পরিবেশ উন্নয়ন একটি মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য শিক্ষা ও গবেষণা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ইতোমধ্যে অনলাইন ক্লাস চালু করা হয়েছে। পরীক্ষা কার্যক্রম চালু রয়েছে। গবেষণা মঞ্জুরি প্রদান অব্যাহত রয়েছে।
উন্নত গবেষণা ও থিসিসের জন্য পুরস্কারের ব্যবস্থা করা হয়েছে। ইতোমধ্যে আর্মড ফোর্সেস মেডিক্যাল ইনস্টিটিউটে বিভিন্ন বিভাগে উচ্চতর কোর্স চালু, উভয় প্রতিষ্ঠানের মধ্যে শিক্ষা, উচ্চতর প্রশিক্ষণ প্রদান ও সে বিষয়ে পারস্পরিক সহযোগিতা প্রদানের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি হয়েছে।
এ বিশ্ববিদ্যালয়কে আন্তর্জাতিক র্যাংকিংয়ে অগ্রগতির জন্য জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে গবেষণালব্ধ প্রবন্ধ নিবন্ধ জার্নালে প্রকাশের ব্যবস্থা করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রন্থাগার, ওয়েবসাইট ও আইটি সেলের উন্নয়ন করা হয়েছে।
৭০০ শয্যা বিশিষ্ট সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতাল-১-এর কার্যক্রম চলতি বছরে মধ্যেই শেষ করতে নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে উল্লেখ করে বিএসএমএমইউ উপাচার্য বলেন, বাংলাদেশ বেতার ভবনে সুপরিকল্পিতভাবে সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতাল-২ এর কার্যক্রম নির্ধারণের দিকনির্দেশনা দেয়া হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম জোরদার করা হয়েছে।
কমিউনিটি ক্লিনিক গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর স্বাস্থ্যসেবার উন্নয়নে বিপ্লব এনেছে বলে মন্তব্য করেন অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেন, কমিউনিটি ক্লিনিক বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন বাস্তবায়নে দেশকে সঠিকভাবে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে কমিউনিটি ক্লিনিক স্বাস্থ্য সহায়তা ট্রাষ্টের সমঝোতা স্মারক সম্পন্ন হয়েছে বলে জানান বিএসএমএমইউ উপাচার্য।
বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্টার অধ্যাপক ডা. এবিএম আব্দুল হান্নানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেন, উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. মুহাম্মদ রফিকুল আলম, উপ-উপাচার্য (গবেষণা ও উন্নয়ন) অধ্যাপক ডা. মো. জাহিদ হোসেন, সার্জারি অনুষদের ডিন অধ্যাপক ডা. ছয়েফ উদ্দিন আহমেদ, ডেন্টাল অনুষদের ডিন অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ আলী আসগর মোড়ল,
বেসিক সাইন্স ও প্যারা ক্লিনিক্যাল সাইন্স অনুষদের ডিন অধ্যাপক ডা. খন্দকার মানজারে শামীম, মেডিসিন অনুষদের ডিন অধ্যাপক ডা. মাসুদা বেগম, শিশু অনুষদের ডিন অধ্যাপক ডা. শাহীন আকতার, নার্সিং অনুষদের ডিন অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ হোসেন, মেডিক্যাল টেকনোলজি অনুষদের ডিন অধ্যাপক ডা. দেবব্রত বনিক, প্রক্টর অধ্যাপক ডা. মো. হাবিবুর রহমান দুলাল, গ্রন্থাগারিক অধ্যাপক ডা. মো. হারিসুল হক প্রমুখ।
এছাড়া অনুষ্ঠানে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ডা. একেএম মোশাররফ হোসেন, বিসিপিএসের সভাপতি অধ্যাপক ডা. কাজী দীন মোহাম্মদ, সিন্ডিকেট সদস্য অধ্যাপক ডা. কাজী শহীদুল আলম, সিন্ডিকেট সদস্য অধ্যাপক ডা. এ এইচএম জহুরুল হক সাচ্চু প্রমুখ জুমের মাধ্যমে অংশগ্রহণ করেন।