ফোন দিলেই বাসায় পৌঁছে যাচ্ছে সিএমপি’র ‘ফ্রি অক্সিজেন সিলিন্ডার’
সোমবার রাত ৩টা। চট্টগ্রাম নগরীর ডবলমুড়িং থানার ডিউটি অফিসারের নম্বরে ফোন দিয়ে এক কিশোর জানালেন, করোনা আক্রান্ত তার মায়ের অবস্থা সংকটাপন্ন। অক্সিজেন লেভেল একেবারে নেমে গেছে। মাকে বাঁচাতে একটি সিলিন্ডার দরকার।
সঙ্গে সঙ্গে কয়েকজন পুলিশ সদস্য একটি সিলিন্ডার নিয়ে পৌঁছে যান ওই কিশোরের আগ্রাবাদের বেপারি পাড়ার বাসায়।
করোনায় অক্সিজেনের সংকটে পড়া মানুষদের জন্য এভাবে ফ্রি অক্সিজেন সিলিন্ডারের হোম ডেলিভারি সেবা চালু করেছে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ।
এই সেবার আওতায় কোনো করোনা আক্রান্ত ব্যক্তি সিএমপি’র আওতাধীন যেকোনো থানায় ফোন দিলেই আধঘণ্টার মধ্যে পৌঁছে দেয়া হচ্ছে জীবন বাঁচানোর এই গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। চলতি মাসের ২১ তারিখ সিএমপি কমিশনার সালেহ মোহাম্মদ তানভীর এই ফ্রি অক্সিজেন ডেলিভারি সেবার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন।
উদ্বোধনের দিন সব থানাকে তিনটি করে অক্সিজেন সিলিন্ডার দেয়া হয়। তবে কয়েকদিনের মাথায় সিলিন্ডার সংখ্যা বেড়ে ৫-৬টা করা হয়েছে।
এ ছাড়া সিএমপি’র সেন্ট্রাল অক্সিজেন ব্যাংকেও বেশকিছু অক্সিজেন সিলিন্ডার জমা রাখা আছে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, অক্সিজেন সার্ভিসের ফ্রি হোম ডেলিভারি সার্ভিস চালুর পর থেকে প্রতিদিনই মানুষ বিভিন্ন থানায় যোগাযোগ করছেন। রাত-বিরেতে পুলিশ সদস্যরা ফোনে সাড়া দিয়ে এতে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিচ্ছেন। সিলিন্ডারে অক্সিজেন ফুরিয়ে গেলে প্রয়োজনে তা আবার রিফিলও করে দেয়া হচ্ছে।
নগরীর ডবলমুড়িং থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ মহসিন জানান, তার ব্যক্তিগত ফেসবুক পেজে ফ্রি অক্সিজেন সার্ভিসের তথ্য দেয়ার পর থেকে অনেকেই ফোন দিচ্ছেন সিলিন্ডারের জন্য। থানার পক্ষ থেকে এতে সাড়া দেয়া হচ্ছে সঙ্গে সঙ্গেই। তবে এক্ষেত্রে সত্যিই সিলিন্ডারের প্রয়োজন আছে কিনা তাও খোঁজ নেয়া হচ্ছে।
এ বিষয়ে সিএমপি’র অতিরিক্ত উপ-কমিশনার শাহ মোহাম্মদ আব্দুর রউফ বলেন, ‘করোনায় আক্রান্ত হয়ে অনেকে বাসায় আইসোলেশনে থাকেন। এ সময় তাদের অক্সিজেনের ঘাটতি হয়। তবে সিন্ডিকেটের কারণে চড়া দামে সিলিন্ডার কিনতে পারেন না। মূলত তাদের জন্যই এই ব্যবস্থা। এখন ফোন পাওয়া মাত্র পুলিশ সদস্যরা যাচাই বাছাই করে রোগীর বাসায় বিনামূল্যে অক্সিজেনের বোতল পৌঁছে দেবেন।’