Lead Newsজাতীয়

বাংলাদেশকে করোনার টিকা কিনতে ৫০ কোটি ডলার দেবে জাইকা

করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিন সংগ্রহ ও বিতরণের জন্য ৫০ কোটি ডলার ঋণ দেবে জাপান আন্তর্জাতিক সহযোগিতা সংস্থা (জাইকা)। স্বাস্থ্য খাতের জন্য ডেভেলপমেন্ট পলিসি লোনের (ডিপিএল) আওতায় জাইকা এ অর্থ দেবে বলে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে।

ডিপিএলের আওতায় ঋণের সুদের হার হবে ০.৬ শতাংশ। ঋণ পরিশোধের সময়সীমা হবে ৩০ বছর এবং অনুগ্রহকাল হবে ১০ বছর।

জাইকা প্রথম ধাপে বাংলাদেশি নাগরিকদের টিকা দেওয়ার জন্য তহবিল ছাড় করতে বাংলাদেশের বর্তমান করোনাভাইরাস পরিস্থিতি সম্পর্কে জানতে চেয়েছে।

জাইকার দক্ষিণ এশিয়া বিভাগের পরিচালক তাকাশশি আকিতো স্বাস্থ্য সচিব আব্দুল মান্নানের কাছে একটি চিঠি দিয়েছেন। ওই চিঠিতে ২৬ নভেম্বরের মধ্যে বাংলাদেশে করোনভাইরাসের সর্বশেষ অবস্থা সম্পর্কে জানতে চাওয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে এ বিষয়ে জাইকাকে জানানো হয়েছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের এক কর্মকর্তা বলেছেন, ‘আমরা আশা করছি, করোনাভাইরাসের প্রতিষেধক বাজারে আসার পরপরই তা সংগ্রহ এবং দেশজুড়ে বিতরণের জন্য উন্নয়ন সহযোগীদের কাছ থেকে সর্বাধিক আর্থিক সহায়তা পাওয়া যাবে।’

জাইকার চিঠিতে বলা হয়েছে, দেশে চিকিৎসক ও নার্সদের মান উন্নয়নের জন্য নতুন ঋণসুবিধার আওতায় চিকিৎসা সুবিধা বা যন্ত্রপাতি সংগ্রহের জন্য ডিপিএলের আওতায় ঋণ ও অনুদান দেওয়া হবে।

এদিকে, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অগ্রাধিকার তালিকায় থাকা ৩ লাখ ৫০ হাজার লোককে টিকা দেওয়ার জন্য প্রথম পর্যায়ে প্রায় ৫০ কোটি ডলারের তহবিলের প্রয়োজন হবে। দ্বিতীয় পর্যায়ে দেশের বাকি লোকদের টিকা দেওয়ার জন্য ৫০ কোটি ডলার থেকে ১০০ কোটি ডলার প্রয়োজন হবে।

জাইকার চিঠিতে করোনাভাইরাস সম্পর্কিত ‘বাংলাদেশ প্রিপার্ডনেস অ্যান্ড রেসপন্স প্ল্যান (বিপিআরপি)’ এর বিষয়ে বিস্তারিত জানতে চাওয়া হয়েছে। এছাড়া, করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়া রোধ ও দ্রুত শনাক্ত করতে বাংলাদেশের স্বাস্থ্য খাতকে এর সক্ষমতা বাড়াতে স্বাস্থ্যরক্ষার প্রয়োজনীয় রূপরেখা, লক্ষ্য, পরিকল্পনার পরিস্থিতি, কাজের ক্ষেত্র এবং অগ্রাধিকারমূলক কর্মকাণ্ড সম্পর্কেও জানতে চাওয়া হয়েছে। 

স্বাস্থ্য বিভাগের হিসাব অনুযায়ী, ১ ডিসেম্বর পর্যন্ত দেশে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ৬ হাজার ৬৭৫ জন। আক্রান্ত হয়েছেন ৪ লাখ ৬৭ হাজার ২২৫ জন।

স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, প্রয়োজনীয় করোনা ভ্যাকসিনের কিছু অংশ ডিসেম্বর মাসে কেনা শুরু হবে। ইতোমধ্যে অর্থ মন্ত্রণালয় এজন্য অর্থ ছাড় করেছে। এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জানিয়েছেন, অগ্রাধিকার ভিত্তিতে করোনা ভ্যাকসিন কেনার জন্য ১ হাজার কোটি টাকা ছাড় করা হয়েছে।

এদিকে, করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিন জরুরি ভিত্তিতে সরাসরি ক্রয় পদ্ধতিতে কেনার জন্য একটি প্রস্তাব বুধবার (২ ডিসেম্বর) অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠকে উপস্থাপন করা হবে।

গত আগস্টে বাংলাদেশের সাতটি উন্নয়ন প্রকল্পে অর্থায়ন করার জন্য ৩১৫ কোটি ডলারের একটি ঋণ প্যাকেজ নিশ্চিত করেছে জাপান। সরকার অনুমান করেছে যে, করোনভাইরাসের ভ্যাকসিন সংগ্রহের জন্য ১০০ থেকে ১৫০ কোটি ডলারের বিদেশি ঋণ প্রয়োজন হবে। অর্থ মন্ত্রণালয় বিনামূল্যে ১৬ কোটি ৫০ লাখ মানুষের জন্য ভ্যাকসিন সংগ্রহের কথা মাথায় রেখে প্রয়োজনীয় অর্থ সংগ্রহের চেষ্টা করছে।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

20 − 20 =

Back to top button