প্রবাস

ভিসার মেয়াদ শেষ হওয়া বাংলাদেশি মুসলিমদের জরিমানা কমাল ভারত

ভিসার মেয়াদ শেষ হওয়ার পরও ভারতে অবস্থানরত বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের মুসলমান নাগরিকদের জরিমানা কমাল ভারত সরকার। এখন অন্যান্য ধর্মের নাগরিকদের মতোই কম জরিমানা গুনতে হবে তাঁদের।

গত বছর ভারতের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক নির্দেশিকায় বলা হয়েছিল, বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের নাগরিকেরা বৈধ পাসপোর্ট ও ভিসা নিয়ে ভারতে আসার পর যদি ভিসার মেয়াদ শেষ হওয়ার আগে নিজ দেশে ফিরে না যান, তবে তাঁদের এই অবৈধ অবস্থানের জন্য বিভিন্ন হারে জরিমানা দিয়ে ভারত সরকারের অনুমতি নিয়ে দেশে ফিরতে হবে।

ওই নির্দেশিকায় বলা হয়েছিল, এই তিন দেশের সংখ্যাগুরু (মুসলিম) নাগরিকেরা যদি ভিসার মেয়াদ শেষের পরও ভারতে অবৈধভাবে অবস্থান করেন, তবে তাঁদের বেআইনি অবস্থানের ১ থেকে ৯০ দিনের জন্য দিতে হবে ২১ হাজার রুপি জরিমানা, ৯১ দিন থেকে ২ বছর পর্যন্ত অবস্থান করলে দিতে হবে ২৮ হাজার রুপি এবং ২ বছরের বেশি সময় ধরে অবস্থান করলে দিতে হবে ৩৫ হাজার রুপি। এই জরিমানার অর্থ নির্দিষ্ট ব্যাংকে জমা দেওয়ার পর ওই নাগরিকেরা বৈধ অনুমতি নিয়ে ভারত থেকে নিজ দেশে ফিরতে পারবেন।

অন্যদিকে, ওই তিন দেশের সংখ্যালঘু নাগরিকদের (হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টান ও অন্যান্য) ভিসার মেয়াদ শেষ হওয়ার পর ১ থেকে ৯০ দিনের জন্য দিতে হবে ১০০ রুপি জরিমানা। ৯১ দিন থেকে ২ বছর পর্যন্ত ২০০ রুপি এবং ২ বছরের বেশি দিনের জন্য ৫০০ রুপি।

এই আদেশ জারির পর এ নিয়ে ভারতে সমালোচনা হয়। দেশটির অনেকেই প্রশ্ন তোলেন, একটি ধর্মনিরপেক্ষ দেশে ভিসার মেয়াদ শেষ হওয়ার পর ভারতে অবস্থানকারী ওই তিন দেশের নাগরিকদের জরিমানার অর্থ প্রদানে কীভাবে এই অসামঞ্জস্য হয়? কেন ধর্মীয় বিভাজন করা হলো?

নির্দেশনার পর ৬ মার্চ কলকাতার দ্য বেঙ্গল চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের সেক্রেটারি (মার্কেটিং) উৎপল রায় একটি চিঠি লেখেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে। সেই চিঠিতে তিনি দাবি করেন, ধর্মনিরপেক্ষ ভারতে এভাবে ভিসার মেয়াদোত্তীর্ণদের ধর্মীয় বৈষম্যমূলক জরিমানা ধার্য হতে পারে না। তিনি বিষয়টি পুনর্বিবেচনা করার আবেদন করেন।

সম্প্রতি এই আদেশ বাতিল করে ওই তিন দেশের ভিসার মেয়াদোত্তীর্ণকারীদের জরিমানার হার সব নাগরিকের জন্য সমান করা হয়। এতে বলা হয়েছে, সবার জন্য ১ থেকে ১৫ দিনের জন্য ৫০০ রুপি, ১৬ থেকে ৯০ দিনের জন্য ৫ হাজার রুপি, ৯১ থেকে ২ বছর ১০ হাজার রুপি এবং ২ বছরের বেশি যাঁরা, তাঁদের ২০ হাজার রুপি জরিমানা দিতে হবে। 

কলকাতায় নিযুক্ত বাংলাদেশের উপহাইকমিশনার তৌফিক হাসান প্রথম আলোকে বলেন, কলকাতার বৈদেশিক আঞ্চলিক নিবন্ধন দপ্তর (এফআরআরও) অফিস থেকে তাঁরা কিছুদিন আগে একটি চিঠি পেয়েছিলেন। সেখানে নতুন জরিমানার হার পুনর্নির্ধারণের কথা বলা হয়েছে।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

10 − nine =

Back to top button