মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদেরও সম্পৃক্ততা আছেঃ জেকেজির আরিফুল
করোনাভাইরাসের ভুয়া সার্টিফিকেট দেয়া ও অর্থ আত্মসাৎসহ নানা অভিযোগে গ্রেপ্তার জেকেজি হেলথ কেয়ারের প্রধান নির্বাহী (সিইও) আরিফুল চৌধুরী জানিয়েছেন, জেকেজির এসব জালিয়াতি কর্মকাণ্ডে সহযোগিতা করেছেন স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের দুই অতিরিক্ত সচিব ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের দুই পরিচালক।
এ ছাড়া করোনাভাইরাস মোকাবেলায় স্বাস্থ্য খাতে সরকারের দেয়া ৫০০ কোটি টাকার একটি অংশ আত্মসাৎ করার পরিকল্পনা করেছিলেন সেই কর্মকর্তারা। রিমান্ডে নেয়ার পর পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে এসব তথ্য জানান আরিফুল চৌধুরী।
এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) এক কর্মকর্তা বলেন, জিজ্ঞাসাবাদে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ওই কর্মকর্তাদের জড়িত থাকার কথা বলেছেন জেকেজির সিইও। অভিযুক্ত ওই কর্মকর্তাদেরও জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। তবে সরকারি কর্মকর্তা হওয়ায় সুনির্দিষ্ট সাক্ষ্যপ্রমাণ ছাড়া তাদের জিজ্ঞাসা করা যাবে না।
পুলিশ সূত্র জানিয়েছে, নমুনা পরীক্ষায় ভুয়া সার্টিফিকেট দিয়ে মানুষের কাছ থেকে প্রায় সাড়ে ৩ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে জেকেজি। টাকাগুলো ব্যাংকে জমা দেয়ার কথা থাকলেও আরিফুল সেই টাকা অন্য কোথাও রাখেন। ইতোমধ্যে তাদেরও চিহ্নিত করা হয়েছে। শিগগিরই টাকা উদ্ধারে অভিযানে নামা হবে।
গোয়েন্দা পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার আব্দুল বাতেন বলেন, আরিফুলের স্ত্রী ও জেকেজির চেয়ারম্যান ডা. সাবরিনা আরিফ চৌধুরী তার ফেস ভ্যালুর সুযোগ নিতেন। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরসহ অনেক অফিসে তার যোগাযোগ ছিল। স্বামীর মালিকানাধীন ওভাল গ্রুপ সাবরিনার লবিংয়ের মাধ্যমে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়সহ বিভিন্ন সরকারি অফিস থেকে কাজ পেয়েছিল।
গোয়েন্দা কর্মকর্তারা জানান, ওভাল গ্রুপের সহযোগী প্রতিষ্ঠান হিসেবে জেকেজি কাজ করছে, এমন কোনো তথ্য-প্রমাণ পাওয়া যায়নি। এমনকি করোনা পরীক্ষার নমুনা সংগ্রহের অনুমতি পাওয়ার সময় তাদের কোনো ট্রেড লাইসেন্স ছিল না। ভলেন্টারি সার্ভিস হিসেবে শুধু বুথ বসিয়ে নমুনা সংগ্রহের অনুমতি দেয়া হয়েছিল।
এদিকে ডা. সাবরিনা ও তার স্বামী আরিফুলকে দ্বিতীয়বারের মতো রিমান্ডে নেয়া হয়েছিল। এর মধ্যে সাবরিনার দ্বিতীয় দফা রিমান্ড গতকাল শনিবারই শেষ হয়ে গেছে। আরিফুলের রিমান্ড আজ রোববার শেষ হওয়ার কথা। তবে তাদের আবারও রিমান্ডের জন্য আবেদন করা হবে বলে জানিয়েছে পুলিশ।