Breakingধর্ম ও জীবন

মহানবী সা. সপ্তাহে দুইদিন রোজা রাখতেন যে কারণে

রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যেসব নফল ইবাদত করতেন তার অন্যতম একটি হলো- সপ্তাহের দুই দিন অর্থাৎ সোম ও বৃহস্পতিবারের রোজা।

এই দুই দিনের রোজা সম্পর্কে হজরত আবু কাতাদা আনসারি রাদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু থেকে বর্ণিত হয়েছে, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওযাসাল্লাম-কে সোমবার দিনে রোজা রাখার কারণ জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেন, এই দিন আমি জন্ম নিয়েছি, আর এদিনই আমার উপর কোরআন নাজিল হয়েছে। (মুসলিম, হাদিস, ২৮০৭; ইবনে খুজাইমা, হাদিস, ২১১৭; মুসনাদে আহমাদ, হাদিস, ২২৫৫০; সুনানে আবু দাউদ, হাদিস, ২৪২৮)

হজরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু থেকে বর্ণিত হাদিসে রাসূল রাদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু বলেন, সোমবার ও বৃহস্পতিবার আল্লাহর কাছে আমল উপস্থাপন করা হয়। তাই রোজা থাকা অবস্থায় আমার আমল উপস্থাপন করা হোক— এটা পছন্দ করি।’ (তিরমিজি, হাদিস, ৭৪৭; সুনানে নাসায়ি, হাদিস, ২৬৬৭)

রাবিআ ইবনুল গাজ (রহ.) থেকে বর্ণিত, তিনি আয়শা রাদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহা-এর কাছে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওযাসাল্লাম-এর রোজা রাখার ব্যাপারে জিজ্ঞেস করেন। তখন তিনি জবাবে বলেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওযাসাল্লাম সোমবার ও বৃহস্পতিবারে রোজা রাখার ব্যাপারে খুবই মনোযোগী ছিলেন। (ইবনে মাজাহ, হাদিস, ১৭৩৯; ইবনে হিব্বান, হাদিস, ৩৬৪৩)

এই হাদিস থেকে বোঝা যায় যে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সোমবার তার জন্মদিন হওয়ার কারণে যেমন রোজা রেখেছেন তেমনি এ দিনটির মর্যাদার কারণেও রোজা রেখেছিলেন। কারণ, এ দিনে আল্লাহ তার ওপর ওহী নাজিল করেছেন। এ দিনে তার আমলনামা আল্লাহর কাছে পেশ করা হয়। তাই রোজা অবস্থায় নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের আমলনামা আল্লাহর সামনে উপস্থাপন হোক তিনি এটাই চাইতেন। আর এই দিন রোজা রাখার অনেকগুলো কারণের মধ্যে নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের জন্মও একটি কারণ ছিলো।

তাই কেউ ক্ষমা লাভ, আল্লাহ তায়ালার নেয়ামতের শুকরিয়া আদায় এবং তার আগমন ও তার ওপর অর্পিত নবুয়তের শুকরিয়া হিসেবে রোজা রাখতে চাইলে তা প্রশংসনীয় এবং নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সুন্নতের অনুকরণ হিসেবে গণ্য হবে।

তবে, এর বাইরে বিশেষ কোন সপ্তাহ, বিশেষ কোন মাসে এ আমলটি করা ঠিক হবে না। বরং সবার উচিত নিয়মিত এ আমল করার চেষ্টা করা অথবা সাধ্যানুযায়ী যেকোনো সময়, যেকোনো সপ্তাহ বা মাসে এই আমল করা। বিশেষ উপলক্ষে এই আমল করলে তা বিদয়াত বলে গণ্য হবে।

সূত্র: ইসলাম জিজ্ঞাসা ও জবাব

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

five × three =

Back to top button