মাদ্রাসাগুলোকে সাম্প্রদায়িকতার আতুড়ঘর বলে অবিহিত করেলেন বিচারপতি মানিক
ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির উপদেষ্টা বিচারপতি শামসুদ্দীন আহমেদ মানিক বলেছেন, মাদ্রাসাগুলো সাম্প্রদায়িকতা ছড়ানোর আতুরঘর। এই মাদ্রাসাগুলোকে অবশ্যই সরকারের নিয়ন্ত্রণে আনতে হবে। একটি দেশে দুই ধরনের পড়াশোনা চলতে পারে না।
তিনি বলেন, এটা ধর্ম ব্যাবসায়ীদের দেশ না। কারণ তারা চায়নি বাংলাদেশ স্বাধীন হোক। একাত্তরে তারা পাকিস্তানের পক্ষে যুদ্ধ করেছে। তাই তাদের উচিত এদেশ ছেড়ে চলে যাওয়া। একাত্তরে তাদের একবার পরাজিত করেছি আবারও তাদের পরাজিত করতে হবে।
সোমবার বিকালে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার প্রাঙ্গনে সামাজিক প্রতিরোধ কমিটির উদ্যোগে সাম্প্রদায়িকতা বিরোধী এক সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে উদ্দেশে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের সাবেক বিচারপতি শামসুদ্দীন আহমেদ মানিক বলেন, কুমিল্লার ঘটনায় পররাষ্ট্রমন্ত্রী অদ্ভুত কথা বললেন-ইকবাল নাকি মাতাল, মাদকসেবী। তিনি কি বিএনপির পক্ষে কথা বললেন নাকি জামাতের পক্ষে। তিনি যদি আওয়ামী লীগের পক্ষে কথা বলতেন, মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে কথা বলতেন। তাহলে তিনি কখনই বলতে পারতেন না এই ইকবাল মাতাল।
সম্প্রতি শারদীয় দূর্গাপূজায় কুমিল্লা চৌমুহনী, রংপুরের পীরগঞ্জসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে সাম্প্রদায়িক সহিংসতার ঘটনার প্রতিবাদে -সাম্প্রদায়িক সহিংসতার বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াও এই শ্লোগানকে সামনে রেখে এক সাম্প্রদায়িক সহিংসতা বিরোধী প্রতিবাদী সমাবেশের আয়োজন করে সামাজিক প্রতিরোধ কমিটি।
সমাবেশে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক সাদেক হালিম বলেন, সাম্প্রদায়িকতা বন্ধের জন্য আমি যদি শুধু পাঠ্যপুস্তক এর কারিকুলাম পরিবর্তন করে তাহলেই হবে না। কারণ প্রাইমারি স্কুল থেকে উচ্চশিক্ষা পর্যন্ত আমাদের শিক্ষকরা তৈরি হচ্ছেন তারা সাম্প্রতিকতা মনে নিয়ে বড় হচ্ছেন। অন্য ধর্মের মানুষ যারা সংখ্যায় কম তাদের প্রতি বিদ্বেষ নিয়ে বের হচ্ছি। আমি কিন্তু সামাজিকীকরণ করছি আমার পরিবারের শিশুটিকেও। তাহলে তো বিপদ আসবেই।
তিনি আরও বলেন, আমরা সবাই জানি মাদ্রাসায় কী হয় কিন্তু মাদ্রাসা পাশাপাশি সাধারণ শিক্ষায়ও আমাদের নজর রাখতে হবে। কারণ হলি আর্টিজানে ঘটনা কোন মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা ঘটায়নি।
সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি গোলাম কুদ্দুস বলেন, কুমিল্লা ও রংপুরের ঘটনা সরেজমিনে না দেখলে বিশ্বাস করতে পারতাম না। মন্দিরে ও বসতবাড়িতে হামলায় তাদের অন্তরে যে ক্ষতের সৃষ্টি হয়েছে। তা অর্থ দিয়ে পূরণ করা যাবেনা। এ ধরনের ঘটনা যাতে না ঘটে সেজন্য আমাদের রাজনীতি যাতে সাম্প্রদায়িক না হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।
রাশেদা কে চৌধুরী বলেন, শুধু দু’একটি ঘটনায় সোচ্চার হলেই হবে না প্রতিটি ঘটনায় সোচ্চার থাকতে হবে। হোক সেটা জাতীয় কোন নিপীড়নের ঘনটা কিংবা আন্তর্জাতিক কোন ঘটনা। আর এক্ষেত্রে আমরা যারা শিক্ষিত সুবিধাভোগীরা আছি তাদেরই এগিয়ে আসতে হবে।
অ্যাডভোকেট সালমা আলী বলেন, সাম্প্রদায়িকতা রুখতে হলে প্রতিটি নাগরিকের অধিকার নিশ্চিত করতে হবে, গণতন্ত্র সুপ্রতিষ্ঠিত করতে হবে। না হলে এমন ঘটনা বারবার ঘটতেই থাকবে।