মালয়েশিয়ায় খ্রিস্টানরাও ‘আল্লাহ’ শব্দ ব্যবহার করতে পারবেন
মালয়েশিয়ার খ্রিস্টানদের ‘আল্লাহ’ শব্দ ব্যবহারের অনুমতি দিয়েছে কুয়ালালামপুর হাইকোর্ট। বিষয়টি নিয়ে এক দশকেরও বেশি সময় ধরে আইনি লড়াই চলছিল। ২০০৮ সালে জিল আয়ারল্যান্ড লরেন্স বিল নামে একজন খ্রিস্টানের কাছে বিমানবন্দরে মালয় ভাষার কতগুলো কম্প্যাক্ট ডিস্কের মধ্যে ‘আল্লাহ’ শব্দটি লেখা দেখতে পেয়ে কর্তৃপক্ষ তা জব্দ করে। ১৯৮৬ সাল থেকে খ্রিস্টানদের জন্য এই শব্দটি ওই দেশে ব্যবহার নিষিদ্ধ ছিল।
ফলে আইনি লড়াইয়ে নামেন মিস লরেন্স বিল। এর এক দশকেরও বেশি সময় পরে বুধবার কুয়ালালামপুর হাই কোর্ট তার পক্ষে রায় দেন। এতে বলা হয়, তার ধর্মীয় বিশ্বাস যা-ই হোক না কেন তিনি অধিকারের ক্ষেত্রে বৈষম্যের শিকারে পরিণত হতে পারেন না। রায়ে বিচারপতি নুর বী বলেন, আরবিতে আরো তিনটি শব্দ ‘কাবা’ ‘বায়তুল্লাহ’ এবং ‘সালাত’সহ খ্রিস্টানরা ‘আল্লাহ’ শব্দ ব্যবহার করতে পারবেন।
তিনি আরো বলেন, এই চারটি শব্দ খ্রিস্টানদের ব্যবহারের ক্ষেত্রে যে নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়েছিল তা বেআইনি এবং অসাংবিধানিক। অনলাইন বিবিসি এ খবর দিয়ে আরো বলেছে, মালয়েশিয়াতে ‘আল্লাহ’ শব্দের ব্যবহার নিয়ে আদালতে বিভক্তি এই প্রথম নয়। অন্য এক ঘটনায় মালয়েশিয়া সরকারের বিরুদ্ধে মামলা করেছিল স্থানীয় ক্যাথলিক সংবাদপত্র হিসেবে পরিচিত দ্য হেরাল্ড। এই পত্রিকাটি তাদের মালয় ভাষার সংস্করণে খ্রিস্টানদের সৃষ্টিকর্তাকে বুঝাতে ‘আল্লাহ’ শব্দের ব্যবহার করতে পারবে না- সরকার এমন সিদ্ধান্ত দেয়ার পর ওই মামলা করা হয়েছিল।
২০০৯ সালে একটি নিম্ন আদালত দ্য হেরাল্ডের পক্ষে রায় দিয়েছিল। তাদেরকে ‘আল্লাহ’ শব্দ ব্যবহারের অনুমতি দিয়েছিল। এর ফলে মুসলিম এবং খ্রিস্টানদের মধ্যে ধর্মীয় উত্তেজনা দেখা দেয়। ফলে কয়েক ডজন চার্চ এবং মুসলিমদের উপাসনাস্থলে হামলা হয়েছিল। পুড়িয়ে দেয়া হয়েছিল। কিন্তু ২০১৩ সালে কোর্ট অব আপিল নিম্ন আদালতের রায়কে পাল্টে দেয়। নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহাল করে। আজ বৃহস্পতিবার মালয়েশিয়ার মাউফাকাত ন্যাশনাল, একটি রাজনৈতিক জোট, আহ্বান জানিয়েছে, হাইকোর্টের সর্বশেষ রায় কোর্ট অব আপিলে পাঠাতে হবে।