মিয়ানমারের গণহত্যার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক আদালতে পূর্ণাঙ্গ আবেদন গাম্বিয়ার
সংখ্যালঘু মুসলিম রোহিঙ্গাদের ওপর নির্যাতন ও গণহত্যার দায়ে আন্তর্জাতিক আদালতে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে করা মামলার পূর্ণাঙ্গ আবেদন জমা দিয়েছে গাম্বিয়া। শুক্রবার (২৩ অক্টোবর) জমা দেওয়া ৫০০ পাতার এ আবেদনে রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে গণহত্যার জন্য মিয়ানমার সরকারের দায় তুলে ধরা হয়েছে।
জাতিসংঘের বিচার আদালতে করা এ আবেদনের পক্ষে পাঁচ হাজার পৃষ্ঠার প্রমাণাদিও উপস্থাপন করেছে গাম্বিয়া। গাম্বিয়া গত বছর নভেম্বরে রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে গণহত্যা রোধ করতে ব্যর্থ হওয়ায় মিয়ানমারের বিরুদ্ধে নেদারল্যান্ডসের হেগে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে (আইসিজে) একটি মামলা করে।
নেদারল্যান্ডসে বাংলাদেশের এক কূটনীতিবিদ গাম্বিয়ার এ পূর্ণাঙ্গ আবেদন জমা দেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
আন্তর্জাতিক আদালত মামলার প্রাথমিক শুনানির পর মিয়ানমারকে রাখাইন রাজ্যে গণহত্যা রোধে অস্থায়ী ব্যবস্থা নেওয়ার আদেশ দিয়ে একটি রুল জারি করেন।
গাম্বিয়ার প্রাথমিক আবেদনের পর আইসিজে মামলার সমর্থনে বেশ কিছু প্রমাণ পান। এর ভিত্তিতে আদালত মিয়ানমারকে ওই অস্থায়ী আদেশ দেন এবং মামলাটি এগিয়ে নিতে সম্মত হন। এরই পরিপ্রেক্ষিতে গাম্বিয়া এ পূর্ণাঙ্গ আবেদন জমা দিল।
এ প্রসঙ্গে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক ও আন্তর্জাতিক আইনের বিশেষজ্ঞ ড. মিজানুর রহমান বলেন, ‘রোহিঙ্গা ন্যায়বিচারের জন্য এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। তবে, এই মামলার সাফল্য নির্ভর করবে আবেদনে অন্তর্ভুক্ত প্রমাণাদি কতটা শক্তিশালী।’
গাম্বিয়ার এ আবেদনের পর মিয়ানমার আইসিজেতে একটি পাল্টা-আবেদন জমা দেওয়ার জন্য তিন মাস সময় পাবে।
আঞ্চলিক মানবাধিকার সংস্থা ফরটিফাই রাইটস এক বিবৃতিতে জানায়, বিচার চলাকালে আবেদন ও পাল্টা-আবেদন জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।
ফরটিফাই রাইটসের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ম্যাথিউ স্মিথ বলেন, ‘এর মাধ্যমে রোহিঙ্গাদের ন্যায়বিচারের দিকটি আরও এক ধাপ এগিয়ে গেল। আন্তর্জাতিক জবাবদিহিতা প্রক্রিয়াও অনেক গুরুত্বপূর্ণ, বিশেষ করে যখন মিয়ানমারে রোহিঙ্গা ও অন্যদের প্রতি ব্যাপক নৃশংস আচরণ অব্যাহত আছে।’
ফরটিফাই রাইটস জানায়, রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে চলমান গণহত্যা রোধে এবং গণহত্যার প্রমাণ সংরক্ষণের জন্য মিয়ানমারকে এখনই আইসিজের আদেশ পালন করা উচিত।