মিঠা পানির মিনি সৈকত – দেশের পর্যটনে নতুন মাত্রা
চাঁদপুরের মতলবে মেঘনা নদীর পাড়ে কক্সবাজারের আদলে ব্যক্তি উদ্যোগে গড়ে তোলা মিঠা পানির মিনি সমুদ্র সৈকত পর্যটকদের আকৃষ্ট করছে। মোহনপুর পর্যটন কেন্দ্রে প্রতিদিনই দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে কয়েকশ পর্যটক দলবেঁধে নৌ পথে ও সড়ক পথে ঘুরতে আসছেন।
সাঁতার না জানলেও পর্যটকরা মিঠা পানির এই সমুদ্র সৈকতে সম্পূর্ণ নিরাপদে গোসলে করতে পারেন। পর্যটন কেন্দ্রের ভেতরে রয়েছে থিম পার্ক, কটেজ, মার্কেটসহ বিভিন্ন ধরনের বিনোদন ব্যবস্থা।
পর্যটন কেন্দ্রে প্রবেশ মূল্য ১০০ টাকা। ভেতরে রয়েছে উন্নত মানের শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত অত্যাধুনিক রেঁস্তোরা দ্য শিপ ইন। সভা, সেমিনার করার মতো এই রেঁস্তোরাটিতে ৫ হাজার লোক একসঙ্গে বসতে পারেন। এছাড়াও রয়েছে উন্মুক্ত বার বি কিউ কর্ণার। পর্যটন কেন্দ্রের বাইরে ঝাউবন, টেস্ট অব হেভেনসহ কয়েকটি খাবার রেঁস্তোরা।
সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, নৌ পথে লঞ্চ ও নৌকায় এবং সড়ক পথে প্রাইভেট গাড়ি নিয়ে পর্যটকরা দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে এখানে ঘুরতে আসছেন।
পর্যটকরা জানান, ‘আমরা কাছেই একটা জায়গায় এসছিলাম। চাঁদপুরের এই মোহনপুর পর্যটন কেন্দ্রের কথা শুনে চলে এলাম ঘুরতে। এসে দেখি এটি একটি অসাধারণ জায়গা। আমরা এখানে এসে খুবই মুগ্ধ হয়েছি। কারণ এখানে কক্সবাজারের আদলে সব কিছু করা হয়েছে। আমি মনে করি দেশের সব জায়গায় এই ধরনের সুবিধা থাকলে মানুষ উপকৃত হবেন। যারা ঘুরতে পছন্দ করেন তাদের আর বাইরে ঘুরতে যেতে হবেনা।’
এই মিনি সমুদ্র সৈকতকে ঘিরে কর্মসংস্থান হয়েছে প্রায় ৩০০ জন নারী পুরুষের। গড়ে উঠেছে অর্ধশত ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। কর্তৃপক্ষের দাবি আগামীতে এখানে অন্তত ২ হাজার লোকের কর্মসংস্থানসহ লক্ষাধিক লোকের রুটি রুজির ব্যবস্থা হবে।
এই পর্যটন কেন্দ্রের উদ্যোক্তা কাজী মিজান বলেন, ‘প্রায় ১৫ বছর আগে আমি এটি করার পরিকল্পনা করি। দীর্ঘদিন আলাপ আলোচনা ও দেশ বিদেশে ঘুরে এটি করা হয়। তবে এটি বাস্তবায়ন হয় ২০২০ সালে। পদ্মা মেঘনা, ডাকাতিয়া ও ধনাগোদা নদীবেস্টিত চাঁদপুর একটি পর্যটকদের জন্য উৎকৃষ্ট জেলা। বিশেষ করে মেঘনা নদীর এই মিঠা পানি বিশ্বের মধ্যে আলোচিত। এখানকার ইলিশ সবচেয়ে সুস্বাদু। এটি একটি মাল্টিপল পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলা হয়েছে। এখানে সার্বক্ষনিক ৩ স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা রয়েছে। একেবারে কম খরচে সারা দেশ থেকে দিনে এসে দিনেই ফিরে যেতে পারছেন পর্যটকরা।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমি মনে করি প্রতিটি মানুষের বিনোদন প্রয়োজন। সমৃদ্ধ জাতি হিসেবে গড়ে উঠতে বিনোদনের বিকল্প নেই। এজন্য আমি আমার ভবিষ্যত প্রজন্মের বিনোদনের কথা ভেবে এটা করেছি।’