কূটনীতি

রোহিঙ্গাদের আশ্রয়ে ‘উদার’ বাংলাদেশকে অনুসরণীয় বললো ইইউ

সাগরে বর্তমানে ভাসমান থাকা রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেয়ার জন্য আন্দামান ও বঙ্গোপসাগর অঞ্চলের দেশগুলোর প্রতি অনুরোধ জানিয়েছে ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন (ইইউ)। এক্ষেত্রে রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেওয়া ‘মানবিক’ ও ‘উদার’ বাংলাদেশকে অনুকরণ করার পরামর্শ দিয়েছে ইইউ।

বাংলাদেশে এ ইস্যুতে যে সহায়তা, উদারতা এবং মানবিকতা দেখিয়েছে তা অনুসরণ করার আহ্বান জানিয়েছে ইইউ।

শনিবার ইইউ’র ভাইস প্রেসিডেন্ট জোসেপ বোরেল এবং কমিশনার জেনেজ লেনারসিস এক যৌথ বিবৃতিতে জরুরি ভিত্তিতে রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেয়ার পরামর্শ দেন।

ইইউ’র বিবৃতিতে বলা হয়, নারী ও শিশুসহ কয়েকশ রোহিঙ্গা গত কয়েক সপ্তাহ ধরে সাগরে ভেসে বেড়াচ্ছে। বর্তমানে আন্দামান ও বঙ্গোপসাগরে তীরগুলো থেকে তাদের সরিয়ে দেয়া হয়েছে। এই অবস্থায় ইইউ জরুরি ভিত্তিতে এ অঞ্চলের দেশগুলোকে অনুরোধ করছে তারা যেন উদ্ধার তৎপরতা চালিয়ে এসব রোহিঙ্গাদের নৌকা থেকে নামিয়ে একটি সমাধান করেন।

করোনাভাইরাসকে পুঁজি করে মানবপাচারকারীরা শ’পাঁচেক রোহিঙ্গাকে মালয়েশিয়ায় পাঠানোর চেষ্টায় সপ্তাহ দুয়েক আগে ট্রলারে করে সাগর পাড়ি দেয়। কিন্তু মালয়েশিয়ায় প্রবেশে ব্যর্থ হয়ে রোহিঙ্গা বোঝাই নৌকা সাগরে ভাসতে থাকে। পরে অবশ্য তাদের আন্দামান ও বঙ্গোপসাগরে তীরগুলো থেকে তাদের সরিয়ে দেয়া হয়। এরই মধ্যে বিভিন্ন জাতিসংঘ ও পশ্চিমা দেশগুলো রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিতে বাংলাদেশকে নানান স্তরে চাপ দিচ্ছে। কিন্তু বাংলাদেশ সাফ জানিয়ে দেয়, ঢাকার পক্ষে আর একজন রোহিঙ্গাকেও জায়গা দেওয়া সম্ভব নয়।

কূটনৈতিক সূত্রগুলো বলছে, এ বিষয়ে ঢাকা তাদের ভাষ্য নিশ্চিত করলেও এখনো বিভিন্ন দেশ থেকে রোহিঙ্গাদের ভেড়াতে অনুরোধ করে যাচ্ছে। কিন্তু ঢাকা তাদের অবস্থানে অটল রয়েছে। তাছাড়া রোহিঙ্গাবোঝাই ট্রলার এই মুহূর্তে বাংলাদেশের জলসীমায় নেই। কাজেই তাদের গ্রহণের বাধ্যবাধকতা নেই বাংলাদেশের।

ইইউ’র বিবৃতিতে বলা হয়, গত ১৬ এপ্রিল শ’চারেক রোহিঙ্গা বাংলাদেশের জলসীমা ব্যবহার করে মালয়েশিয়ায় যাওয়ার চেষ্টা করলে কোস্টগার্ড তাদের নিরাপদ স্থানে ফিরিয়ে আনার উদাহরণ টেনে বলা হয়, রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেওয়ার বিষয়ে বাংলাদেশ ক্রমাগত মানবিকতা ও উদারতার পরিচয় দিচ্ছে। এক্ষেত্রে আন্দামান ও বঙ্গোপসাগর অঞ্চলের দেশগুলোর এ সমস্যার সমাধান করতে পারে।

এছাড়া বিবৃতিতে ইইউ মিয়ানমারের সেনাবাহিনীকে জরুরি ভিত্তিতে কোনো ধরনের শর্ত ছাড়াই যুদ্ধ বন্ধ করার আহ্বান জানায়। পাশাপাশি রোহিঙ্গাদের আরও সাহায্যের প্রয়োজন পড়লে ইইউ অব্যাহতভাবে সঙ্গে থাকবে বলে জানায়।

এ সময় ইইউ বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গাদের স্বেচ্ছায়, নিরাপদ এবং সম্মানের সঙ্গে প্রত্যাবাসনের পক্ষে ইইউ কাজ করছে বলেও জানানো হয়।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

11 + fourteen =

Back to top button