Breakingআন্তর্জাতিক

রোহিঙ্গাদের ফেরাতে হঠাৎ তৎপর মিয়ানমার, যা চায় জাতিসংঘ-বাংলাদেশ

রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নেওয়ার ব্যাপারে মিয়ানমারের সাম্প্রতিক তৎপরতাকে সন্দেহের চোখে দেখছে জাতিসংঘ ও বাংলাদেশ। জাতিসংঘ শরণার্থী সংস্থা ইউএনএইচসিআর রোববার এক বিবৃতিতে বলেছে, প্রত্যাবাসনের এই প্রক্রিয়ার অংশ নয় জাতিসংঘ। সংস্থাটি মনে করে, মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গাদের ফিরে যাওয়ার উপযুক্ত পরিবেশ সৃষ্টি হয়নি। অপরদিকে পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন বলেছেন, প্রত্যাবাসনের জন্য জাতিসংঘসহ আসিয়ান কিংবা তৃতীয় কোনো পক্ষের মধ্যস্থতা প্রয়োজন।

সম্প্রতি মিয়ানমারের একটি প্রতিনিধি দল বাংলাদেশ সফরে এসে রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নেওয়ার লক্ষ্যে কক্সবাজারের ক্যাম্পে সাক্ষাৎকার নেওয়া শুরু করেছে। ২০০৫ সালের পর মিয়ানমার একজন রোহিঙ্গাকেও ফিরিয়ে নেয়নি। তারপর ২০১৭ সালে রাখাইন রাজ্যে নির্যাতনের শিকার হয়ে রোহিঙ্গা ঢল বাংলাদেশে প্রবেশ করে। বর্তমানে বাংলাদেশে প্রায় ১১ লাখ রোহিঙ্গা তিনটি ক্যাম্পে অবস্থান করছেন। হঠাৎ করে মিয়ানমার ফিরিয়ে নেওয়ার উদ্যোগ নেওয়াকে আইওয়াশ মনে করছেন অনেকে।

আগামী ২২ এপ্রিল ‘ইন্টারন্যাশনাল কোর্ট অব জাস্টিজ’ (আইসিজে) মিয়ানমারের বিরুদ্ধে মামলার রায় দেবে। এই আদালত কোনো ব্যক্তির বিরুদ্ধে রায় দেয় না। দেশের বিরুদ্ধে রায় দেয়। রোহিঙ্গাদের গণহত্যা চালিয়ে বিতাড়িত করার পর আইসিজে অন্তর্বর্তী রায়ে মিয়ানমারকে নতুন করে রোহিঙ্গাদের নির্যাতন ও বিতাড়ন বন্ধ করার নির্দেশ দিয়েছিল। কিন্তু মিয়ানমার এই রায় পালন করেনি। আইসিজের রায়ে আগে মিয়ানমারের তৎপরতাকে তাই সন্দেহজনক মনে করছেন অনেকে।

ইউএনএইচসিআর বিবৃতিতে বলেছে, রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনের লক্ষ্যে বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের মধ্যে সাম্প্রতিক আলোচনায় জাতিসংঘ যুক্ত নয়। রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের প্রশ্নে ইউএনএইচসিআরের অবস্থান অপরিবর্তিত। রোহিঙ্গাদের ফিরে যাওয়ার জন্য উপযুক্ত পরিবেশ বর্তমানে রাখাইন রাজ্যে নেই। প্রত্যেক শরণার্থীর তার নিজ দেশে ফিরে যাওয়ার অধিকার আছে। কিন্তু তাদের জোরপূর্বক ফেরত পাঠানো যাবে না। বর্তমান সংকট সৃষ্টির পর থেকে বাংলাদেশ স্বেচ্ছায় টেকসই প্রত্যাবাসনের ব্যাপারে অঙ্গীকার ব্যক্ত করেছে। ইউএনএইচসিআর মনে করে, প্রত্যাবাসনের জন্য রোহিঙ্গাদের সঙ্গে সব পক্ষের আলোচনা করতে হবে। রাখাইনের বসবাসের পরিবেশ অবহিত করতে হবে।

এদিকে পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন রোববার সাংবাদিকদের বলেছেন, রোহিঙ্গারা মিয়ানমার ফিরে যাওয়ার পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে কিনা তা দেখার জন্য জাতিসংঘসহ তৃতীয় পক্ষের উপস্থিতি প্রয়োজন। সেটা হতে পারে আসিয়ান কিংবা অন্য কোনো পক্ষ।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

3 × one =

Back to top button