কোভিড-১৯ এর সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে আগামী সোমবার শুরু হতে যাওয়া “কঠোর লকডাউনে” কারখানা চালু রাখতে চান তৈরি পোশাকশিল্পের মালিকেরা। ইতিমধ্যে মালিকদের দুই সংগঠন বিজিএমইএ ও বিকেএমইএ সরকারের উচ্চপর্যায়ে এ–সংক্রান্ত দাবি জানিয়েছে। এখনো সরকারের পক্ষ থেকে এখন পর্যন্ত তাদের কোনো সিদ্ধান্ত জানানো হয়নি।
সরকারের এক বিজ্ঞপ্তিতে গতকাল শুক্রবার রাতে বলা হয়েছে, “২৮ জুন সোমবার থেকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত সারা দেশে কঠোর লকডাউন পালন করা হবে। এ সময় জরুরি কারণ ছাড়া কেউ বাড়ির বাইরে বের হতে পারবেন না। এ সময় সব ধরনের সরকারি-বেসরকারি অফিস বন্ধ থাকবে। জরুরি পণ্যবাহী ছাড়া সব ধরনের গাড়ি চলাচলও বন্ধ থাকবে। শুধু অ্যাম্বুলেন্স ও চিকিৎসাসংক্রান্ত কাজে যানবাহন চলাচল করতে পারবে”।
রপ্তানিমুখী শিল্পকারখানা ও কাভার্ড ভ্যান চালু রাখতে আমরা সরকারের উচ্চপর্যায়ে অনুরোধ করেছি। কারণ, লকডাউনে কারখানা বন্ধ রাখলে শ্রমিকেরা গ্রামের বাড়ির দিকে রওনা দেবেন। তাতে বিশৃঙ্খলা তৈরি হবে।
শহিদউল্লাহ আজিম, সহসভাপতি, বিজিএমইএ
সরকারের ওই তথ্যবিবরণীর পর থেকেই কঠোর লকডাউনে তৈরি পোশাকসহ অন্যান্য শিল্পকারখানা চালু থাকবে কি না, সেটি নিয়ে দ্বিধা তৈরি হয়েছে। বিজিএমইএ ও বিকেএমইএর নেতারাও স্পষ্ট করে কিছু বলতে পারেননি। তাঁরা সরকারকে কারখানা খোলা রাখতে অনুরোধ করেছেন। এখন সরকার কী নির্দেশনা দেয়, তার দিকে তাকিয়ে আছেন নেতারা। আজ সন্ধ্যার মধ্যে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ প্রজ্ঞাপন জারি করার কথা রয়েছে। গত এপ্রিলে শুরু হওয়া লকডাউনের মধ্যেও শিল্পকারখানা চালু ছিল।
বিজিএমইএর সহসভাপতি শহিদউল্লাহ আজিজ বলেন, “এখনো কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। তবে রপ্তানিমুখী শিল্পকারখানা ও কাভার্ড ভ্যান চালু রাখতে আমরা সরকারের উচ্চপর্যায়ে অনুরোধ করেছি। কারণ, লকডাউনে কারখানা বন্ধ রাখলে শ্রমিকেরা গ্রামের বাড়ির দিকে রওনা দেবেন। তাতে বিশৃঙ্খলা তৈরি হবে। আমাদের ৯০ শতাংশ শ্রমিকই গণপরিবহন ব্যবহার করেন না, তাঁরা কারখানার আশপাশে থাকেন। আবার উৎপাদন বন্ধ থাকলে ক্রয়াদেশও চলে যাবে”।
মন্ত্রিপরিদ বিভাগের সচিব জানিয়েছেন, “শিল্পকারখানা চালু থাকবে। এ ছাড়া আজ সন্ধ্যা সাড়ে সাতটায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সভাপতিত্বে লকডাউন ব্যবস্থাপনা নিয়ে একটি উচ্চপর্যায়ের বৈঠক রয়েছে। সেই বৈঠকে সবকিছু পরিষ্কার হবে বলে আশা করছি”।
মোহাম্মদ হাতেম আরও বলেন, ‘দুই-তিনটি কারণে বর্তমানে পোশাক কারখানা খোলা রাখা প্রয়োজন। প্রথমত, সামনের মাসেই পবিত্র ঈদুল আজহা। ক্রয়াদেশ অনুযায়ী পণ্য সরবরাহ দেওয়ার চাপ রয়েছে। সময়মতো সরবরাহ না দিতে পারলে ঈদের আগে ক্রেতারা অর্থ পরিশোধ করবেন না। সেটি হলে শ্রমিকদের বেতন–ভাতা দেওয়া কঠিন হবে। দ্বিতীয়ত, বর্তমানে পোশাকের ক্রয়াদেশ আসার মৌসুম। লকডাউনে কারখানা বন্ধ থাকলে ক্রেতাদের কাছে ভুল বার্তা যাবে। তারা অন্য দেশে ক্রয়াদেশ সরিয়ে নিয়ে যাবে। তৃতীয়ত, কারখানায় থাকলেও শ্রমিকেরা অনেক বেশি শৃঙ্খলার মধ্যে থাকবেন। তখন স্বাস্থ্যবিধি মানাও আমাদের জন্য সহজ হবে