Breakingক্রিকেট

লজ্জাজনক পরাজয়ে টি-টোয়েন্টিতেও হোয়াইটওয়াশ বাংলাদেশ

শেষ সুযোগ ছিল আজ। নিউজিল্যান্ডের সবচেয়ে জনবহুল শহর অকল্যান্ডে জয়ে ফিরে ২০ বছরের খরা ঘুচানোর মিশনে নেমেছিল টাইগাররা।

কিন্তু তা তো হলোই না, বাংলাদেশ দলের এমন শোচনীয় পরাজয়ের কথা ভাবেনি খোদ নিউজিল্যান্ড দলই।

তারা এখন বলতেই পারেন, পাড়ার ক্রিকেটারদের বিপক্ষে খেললেও ম্যাচটি আরও একটু দীর্ঘ হতো।

বৃহস্পতিবার অকল্যান্ডে  তৃতীয় ও শেষ টি-টোয়েন্টিতে ৬৫ রানে হারল বাংলাদেশ।

তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ ৩-০তে নিশ্চিত করে বাংলাদেশকে হোয়াইটওয়াশ করল স্বাগতিকরা।

এর আগে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজও হোয়াইটওয়াশ হয়েছে টাইগাররা।

সে হিসেবে নিউজিল্যান্ড সফরে ডবল হোয়াইটওয়াশের স্বীকার বাংলাদেশ।

২০০১ সালে নিউজিল্যান্ডে প্রথম সফরের পর এ পর্যন্ত টানা ৩২ হার টাইগারদের ললাট লিখন হয়েছে। এরমধ্যে এবারের সফরে টানা পাঁচটি। অকল্যান্ডেও একই গল্পের পুনরাবৃত্তি ঘটে সংখ্যাটা হলো ছয়ে।

আজ বৃষ্টি বাগড়ায় প্রায় আড়াই ঘণ্টা নষ্ট হওয়ায় কুড়ি ওভারের ম্যাচ ছেঁটে ১০ ওভারে পরিণত হয়।

টসে জিতে অধিনায়ক লিটন দাস নিউজিল্যান্ডকে ব্যাটিংয়ে পাঠায়।

ব্যাট হাতে পেয়ে অকল্যান্ডের মাঠে রানের বৃষ্টি ঝড়ান কিউই ওপেনার মার্টিন গাপটিল ও ফিন অ্যালন।

এ দুই ওপেনারের বিধ্বংসী ব্যাটিংয়ে ভর করে মাত্র ১০ ওভারে ১৪২ রানের লক্ষ্য ছুড়ে দেয় নিউজিল্যান্ড।

আর এতো বড় লক্ষ্য তাড়ায় মাঠে নেমেই বিপর্যস্ত বাংলাদেশ দল।

৪ বল খেলে দুই বাউন্ডারি হাঁকিয়েই আউট হয়ে যান ওপেনার সৌম্য সরকার। ১০ রান জমা করেই বিদায় নেন তিনি।

কিউই অধিনায়ক টিম সাউদির বলে কট এন্ড বোল্ড হন সৌম্য।

সৌম্যর দেখাদেখি আউট হয়ে যান অধিনায়ক লিটন দাসও। এক বল মোকাবিলা করতে গিয়েই সাউদির বলে সরাসরি বোল্ড হয়ে ফিরলেন। রানের খাতাই খুলতে পারেননি তিনি।

অধিনায়কের পর আউট হয়ে গেছেন ওপেনার নাঈম শেখও। ১১ বলে ১৯ রান করে অ্যাশলের বলে সাজঘরে ফিরেছেন তিনি।

সৌম্য ও লিটনের আউটের পর ব্যাট হাতে নামেন নাজমুল হোসেন শান্ত। অপরপ্রান্তে নামেন অলরাউন্ডার আফিফ হোসেন।

হতাশ করেন এ দুজনও। দুজনেই গুনে গুনে ৮ রান জমা করে সাজঘরের পথ ধরেন। দায়িত্ব শেষ হয়ে যায় তাদের।

দেশে ফেরার তাড়ায় ছিলেন টেলএন্ডাররাও। মোসাদ্দেক হোসেন সৈকতকে অপরপ্রান্তে রেখে একে একে বিদায় নেন মেহেদী হাসান, শরিফুল ইসলাম ও তাসকিন আহমেদ।

সৈকত ৮ বলে ১৩ রান করে সাউদির বলে আউট হন।

ফলে নির্ধারিত ওভারের ৩ বল বাকি থাকতেই ৭৬ রানে গুটিয়ে যায় বাংলাদেশের ইনিংস।

ফলে ৬৫ রানে জয় পায় নিউজিল্যান্ড।

নিউজিল্যান্ডের বোলারদের মধ্যে সবচেয়ে সফল টোড অ্যাশলে। ২ ওভার করে ১৩ রান দিয়ে ৪ উইকেট শিকার করেছেন। ১৫ রান দিয়ে ৩ উইকেট শিকার করেছেন টিম সাউদি।

এর আগে প্রথমে ব্যাটিংয়ে নেমে তাণ্ডব চালান গাপটিল ও ফিন।

তাদের মারুকুটে ইনিংসে রীতিমতো রানের বন্যায় খরকুটোর মতো ভেসে যায় বাংলাদেশি বোলাররা।

গাপটিলের ১৯ বলে ৪৪ রানের ইনিংসের পাশাপাশি তাণ্ডব চালালেন ফিন। মাত্র ২৯ বলে করেন ৭১ রান।

গাপটিল ঝড় থামান ডানহাতি অফ-ব্রেক বোলার মেহেদী হাসান।

বাংলাদেশি বোলারদের পাড়ার ক্রিকেটার বানিয়ে ছাড়েন ফিন অ্যালান। মাত্র ২৯ বলে ৭১ রান করে আউট হন তিনি। এতে ৩টি ছক্কা ও ১০টি চারের মার ছিল।

তার এই টর্নেডো ইনিংসে ভর করে নির্ধারিত কুড়ি ওভার শেষে নিউজিল্যান্ডের সংগ্রহ দাঁড়ায় ৪ উইকেট হারিয়ে ১৪১ রান।

অর্থাৎ প্রতি ওভারে ১৪.১০ করে রান তুলেছে কিউই ব্যাটসম্যানরা।

ম্যাচে গাপটিল মেরেছেন সর্বাধিক পাঁচটি ছক্কা। তিনি আউটের পর মাঠে নেমে গ্লেন ফিলিপসও তাণ্ডব শুরু করেছিলেন। কিন্তু দুই ওপেনারের মতো পারেননি তিনি।

পেসার শরিফুল ইসলামের বলে সৌম্যর হাতে ক্যাচ দেওয়ার আগে ফিলিপস করেন ৬ বলে ১৪ রান। এর মধ্যে মাত্র ২ রান এসেছে দৌড়িয়ে। বাকি ১২ রান এসেছে দুটি ছক্কায়।

ফিলিপসের আউটের পর ফিনের সঙ্গী হন ড্যারেন মিচেল। ৬ বলে ১১ রান করে অপাজিত থাকেন।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

four × one =

Back to top button