সকল প্রস্তুতি শেষে অপেক্ষা এখন রস সংগ্রহের
দেশের বিভিন্ন এলাকায় সব প্রস্তুতি শেষে খেজুরের রস সংগ্রহের প্রস্তুতি নিচ্ছেন গাছিরা। রস সংগ্রহের জন্য গাছ কেটে প্রস্তুত করে হাঁড়ি বসাচ্ছেন কেউ কেউ।
সরেজমিন দেখা যায়, হেমন্তের সকালে গাছিরা ছুটছেন খেজুর গাছ কেটে রস নেওয়ার উপযোগী করার জন্য। গাছের বাকল তুলে গাছিরা হাঁড়ি বেঁধে দিচ্ছেন অনেকে। এখনো গাছ থেকে রস সংগ্রহ করা না গেলেও প্রতিদিনই গাছ কাটতে হয় তাদের।
কোমরে রশি বেঁধে গাছে ঝুলে রস সংগ্রহের কাজ করছেন গাছিরা। বিকেলে ছোট-বড় মাটির হাঁড়ি গাছে বাঁধা হয়। রস ভর্তি সে হাঁড়ি সকালে নামানো হয়। পরে কাঁচা রস বিভিন্ন এলাকার হাটে-বাজারে বিক্রি করা হয়। কেউ কেউ সকালেই এ রস জ্বালিয়ে গুড় তৈরি করেন।
চুয়াডাঙ্গার জীবননগর উপজেলার উথলী গ্রামের কাদের মল্লিক বলেন, গত ২০ দিন ধরে কাজ শুরু হয়েছে। গাছের ময়লা ও অপ্রয়োজনীয় ডালপালা ছেঁটে ফেলা হচ্ছে। গাছের সোনালী অংশ বের করে নলি স্থাপনের কাজও প্রায় শেষ। কয়েকদিনের মধ্যে রস সংগ্রহের কাজ শুরু হবে। শীতের সঙ্গে জড়িয়ে আছে গ্রামবাংলার ঐতিহ্যবাহী খেজুর রস। সপ্তাহ দুয়েক পর গাছ থেকে রস সংগ্রহ শুরু হবে। নিজের ৪০টিসহ ৮০ গাছ থেকে তিনি রস সংগ্রহের প্রস্তুতি নেন।
খেজুর গাছের রস হতে উৎপাদিত গুড় দেশের বিভিন্ন স্থানে ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। প্রতি বছর এ গ্রাম থেকে ট্রাক ভর্তি গুড় দেশের বিভিন্ন স্থানে যায়। রস থেকে গুড় তৈরির কাজ শুরু হয়ে চলবে ফাল্গুন মাস পর্যন্ত। অল্প কয়েকদিনের মধ্যে বাজারগুলোতে উঠতে শুরু করবে খেজুরের পাটালি ও গুড়।
চুয়াডাঙ্গা জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ড. মো. আব্দুল মাজেদ জানান, বর্তমানে জেলায় দুই লাখ ৪৮ হাজার ৯৬০ খেজুর গাছ রয়েছে। এরমধ্যে চুয়াডাঙ্গা সদরে ৯৩ হাজার ৪৫০টি, দামুড়হুদায় ৮৩ হাজার ৭০০টি, জীবননগরে ৩৬ হাজার ৫০০টি ও আলমডাঙ্গায় ৩৫ হাজার ৩১০টি খেজুর গাছ রয়েছে। যা থেকে এ বছর দুই হাজার ৫০০ টন গুড় উৎপাদন করা হবে।