আইন ও বিচার

সাম্প্রদায়িক হামলার ঘটনায় রাষ্ট্র নিশ্চুপ নেইঃ হাইকোর্ট

বিভিন্ন সময় দেশে সাম্প্রদায়িক হামলার ঘটনায় রাষ্ট্র নিশ্চুপ নেই বলে মন্তব্য করেছেন উচ্চ আদালত।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম থেকে উসকানিমূলক সব পোস্ট সরানো এবং সারাদেশে সাম্প্রদায়িক হামলার ঘটনায় বিচার বিভাগীয় তদন্ত চেয়ে করা রিটের শুনানিতে বৃহস্পতিবার (২৮ অক্টোবর) হাইকোর্টের বিচারপতি মো. মজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি মো. কামরুল হোসেন মোল্লার সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ মন্তব্য করেন।

এদিন রিট শুনানির শুরুতেই রাষ্ট্রপক্ষের প্রধান আইন কর্মকর্তা অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন বলেন, রিট আবেদনে হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর হামলার ঘটনায় রাষ্ট্রের ব্যর্থতা ও স্থানীয় প্রশাসনকে সরাসরি দায়ী করা হয়েছে। আমরা আবেদন থেকে এ শব্দগুলো প্রত্যাহারের দাবি জানাই। কারণ হামলার ঘটনায় রাষ্ট্র বসে নেই। কুমিল্লা ও রংপুরে অনেক দুর্বৃত্তকে গ্রেফতার করা হয়েছে। যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।

এ সময় হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট বেঞ্চের কনিষ্ঠ বিচারপতি মো. কামরুল হোসেন মোল্লা বলেন, হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষের ওপর, বাসস্থান ও উপাসনালয়ে হামলার ঘটনায় পুলিশ অ্যাকশন নিয়েছে, মামলা হয়েছে, অনেকে গ্রেফতার হয়েছেন।

তিনি প্রশ্ন রেখে বলেন, এ অবস্থায় আমরা কি রাষ্ট্রকে দায়ী করতে পারি? পরে এ বিষয়ে দায়ের হওয়া রিটটি সংশোধন করে আনার জন্য আইনজীবী ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়াকে বলেন আদালত এবং আদেশের জন্য দুপুরে আড়াইটায় সময় নির্ধারণ করে আদেশ দেন।

এর আগে গত ২৬ অক্টোবর সাম্প্রদায়িক সম্প্রতি বিনষ্টের উদ্দেশ্যে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেওয়া সব ধরনের উসকানিমূলক পোস্ট ও ভিডিও অপসারণের নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে একটি রিট আবেদন দায়ের করা হয়। সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট অনুপ কুমার সাহাসহ দুই আইনজীবীর পক্ষে সুপ্রিম কোর্টের অন্য আইনজীবী ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়া এ রিট দায়ের করেন।

রিটে সারাদেশে হিন্দু সম্প্রদায়ের ঘরবাড়ি, উপাসনালয় ও সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর হামলার ঘটনায় দায়ীদের খুঁজে বের করতে বিচার বিভাগীয় তদন্তের আর্জি জানানো হয়। একইসঙ্গে হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগে ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসন এবং ক্ষতিপূরণ দেওয়ার বিষয়টি উল্লেখ করা হয়। এতে হিন্দু সম্প্রদায়কে নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ দোষী কর্মকর্তাদের আদালতে হাজির করার নির্দেশনাও চাওয়া হয়।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব, আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব, তথ্য, যোগাযোগ ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের সচিব, সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব, পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজি), বাংলাদেশ টেলি কমিউনিকেশনের (বিটিআরসি) চেয়ারম্যান, কুমিল্লা, চাঁদপুর, নোয়াখালী, চট্টগ্রাম, রংপুর, ফেনীর ডিসি-এসপিসহ ১৯ জনকে রিটে বিবাদী করা হয়।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

three × 2 =

Back to top button