সিনহা হত্যার পর কমেছে ‘ক্রসফায়ার’
চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে জুলাই এই সাত মাসে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত হয়েছেন ১৮৪ জন । শুধু জুলাই মাসেই বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডে প্রাণ গেছে ৪৫ জনের এবং গড়ে প্রতি মাসে ২০ জনের বেশি প্রাণ হারিয়েছেন ।
৩১শে জুলাই সেই তালিকায় যুক্ত হয় অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খানের নাম। এই ঘটনার পর আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে কথিত গোলাগুলিতে প্রাণহানিতে বেশ পরিবর্তন হয়েছে। অগাস্ট-সেপ্টেম্বরে ‘ক্রসফায়ার-বন্দুকযুদ্ধে মারা পড়েছেন মাত্র একজন।
হঠাৎ ‘বন্দুকযুদ্ধ’ থমকে যাওয়া নিয়ে পুলিশের সাবেক একজন আইজিপি বলেছেন, নানা সময়ে বিভিন্ন ব্যক্তি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কর্মকর্তাদের কাছে গিয়ে সন্ত্রাসী-অপরাধীদের ‘বন্দুকযুদ্ধে’ মারা যাওয়ার পক্ষে বলেন, কিন্তু পুলিশ বিপদে পড়লে ‘কেউ পাশে থাকেন না’।
এ থেকে ‘বন্দুকযুদ্ধ’ যে ভালো নয়, সেই উপলব্ধি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হয়েছে বলেই ধারণা তার।
আসকের তথ্যানুযায়ী,গত জুন মাসে ২৮টি, মে মাসে ২৯টি, এপ্রিলে ১৬টি, মার্চ মাসে ৩৬টি, ফেব্রুয়ারিতে ২৬টি এবং জানুয়ারিতে ২৩টি বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড ঘটেছে। যার মধ্যে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ বেশিরভাগই নিহত হয়েছে।
অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তা মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান হত্যার ঘটনার পর পরই পুরো বাংলাদেশেই ক্রসফায়ার বা বন্দুকযুদ্ধের ঘটনা আশ্চর্যজনকভাবে কমে এসেছে।
মানবাধিকারকর্মী ও মানবাধিকার আইনজীবীরা এই বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড কমে যাওয়ার ঘটনাকে ইতিবাচক হিসেবে দেখছেন।
মানবাধিকারকর্মীরা মনে করছেন, দেশজুড়ে বিচার বহির্ভূত হত্যাকাণ্ড নিয়ে বাংলাদেশে পুলিশের পেশাদারিত্বে প্রশ্ন উঠছে। হঠাৎ করে মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান হত্যাকাণ্ডের পর জনগণের ভেতর ক্ষোভ তৈরি হয়েছে এবং প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।
এমন অবস্থায় এটি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কৌশল কিনা এবং ভবিষ্যতে কী হয় সেটা নিয়ে এখনো সংশয় দেখছেন কেউ কেউ।