আন্তর্জাতিক

সেপ্টেম্বরেই আফগান ছাড়বে মার্কিন সেনারা

আফগান থেকে নিজেদের সেনাবাহিনী পুরোপুরি প্রত্যাহার করে নেয়ার জন্য তালেবানদের সাথে গোপন সমঝোতা করছে যুক্তরাষ্ট্র।

ওই সমঝোতা অনুযায়ী সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এ বছরের মে মাসের মধ্যে মার্কিনিদের আফগানিস্তান ছাড়ার কথা দিয়েছিলেন। খবর বিবিসির।

কিন্তু নতুন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ট্রাম্পের ওই সিদ্ধান্ত বাতিল করেন। বাইডেন এ-সংক্রান্ত নতুন ঘোষণা দিতে যাচ্ছেন। পেন্টাগন সূত্রে জানা গেছে তিনি আগামী ১১ সেপ্টেম্বরের মধ্যে আফগানিস্তান থেকে সব মার্কিন সেনা প্রত্যাহার করে নেওয়ার কথা বলতে পারেন।

২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বর যুক্তরাষ্ট্রে সন্ত্রাসী হামলার জের ধরে সন্ত্রাসবিরোধী যুদ্ধের নামে আফগানিস্তানে সামরিক অভিযানে যায় যুক্তরাষ্ট্র।

‘নাইন–ইলেভেন’ নামে পরিচিত যুক্তরাষ্ট্রে সন্ত্রাসী হামলার ঘটনার ২০ বছর পূর্তির আগেই আফগানিস্তান থেকে সব মার্কিন সেনা প্রত্যাহার করছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন।

আফগানিস্তানে যুদ্ধ করতে গিয়ে এ পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রের ২ হাজার ৩০০ জনের বেশি সেনা নিহত হয়েছেন। ২০ হাজারের বেশি সেনাসদস্য আহত হয়েছেন।

আমেরিকার সন্ত্রাসবিরোধী যুদ্ধ আফগানিস্তান থেকে অন্যত্রও বিস্তৃত হয়। তবে শুধু আফগানিস্তানেই যুদ্ধ করতে গিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের ব্যয় হয়েছে কয়েক ট্রিলিয়ন ডলার। প্রাণহানি, বিপুল ব্যয়—এসবে যুক্তরাষ্ট্রের সাধারণ জনগণ ক্ষুব্ধ।

এ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের রাজপথে যুদ্ধবিরোধী মিছিল-সমাবেশ পর্যন্ত হয়েছে। আফগানিস্তান থেকে মার্কিন সেনাদের দেশে ফিরিয়ে আনার দাবি উঠতে দেখা গেছে।

আফগানিস্তানে অবস্থানরত মার্কিন সেনা ইতিমধ্যে কমিয়ে আনা হয়েছে। আড়াই হাজারের কিছু বেশি মার্কিন সেনা এখনো আফগানিস্তানে রয়েছেন। তারা আফগান সরকারকে নিরাপত্তা দেওয়ার জন্য কার্যত কাজ করছেন।

আফগান যুদ্ধ পুরোপুরি গুটিয়ে আনার জন্য তালেবানের সঙ্গে গোপন সমঝোতা করছে যুক্তরাষ্ট্র। সমঝোতা অনুযায়ী, সব মার্কিন সেনা আফগানিস্তান ত্যাগ করবে। আর তালেবান আবার দেশটি রাজনীতিতে ফিরবে।

প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার সময় থেকেই আফগানিস্তান থেকে সেনা প্রত্যাহারের জন্য চাপ ছিল। ব্যয়বহুল এ যুদ্ধ চালানো ও আফগানে মার্কিন সেনা উপস্থিতির আর কোনো কারণ নেই বলে অনেকে মনে করেন।

বারবার সময়সূচি নির্ধারণ করেও সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা বা ডোনাল্ড ট্রাম্পের সময় সব মার্কিন সেনা আফগানিস্তান থেকে প্রত্যাহার করা সম্ভব হয়নি।

মার্কিন সামরিক বিশেষজ্ঞরা মত দেন যে সময়সীমা নির্ধারণ করে নয়, পরিস্থিতি বিবেচনা করেই আফগানিস্তান থেকে সব মার্কিন সেনা প্রত্যাহার করা উচিত।

জো বাইডেন ক্ষমতা গ্রহণের আগেই বলেছিলেন, আফগানিস্তান থেকে সব মার্কিন সেনা দ্রুততার সঙ্গে প্রত্যাহার করা হবে। প্রথমে মে মাসের মধ্যে সেনা প্রত্যাহারের কথা ছিল।

কিন্তু ক্ষমতা নেওয়ার পর প্রেসিডেন্ট বাইডেন বলেন, মে মাসের মধ্যেই আফগানিস্তান থেকে সব মার্কিন সেনা ফিরিয়ে আনা সম্ভব হবে না। পরিকল্পিত পদক্ষেপের মাধ্যমে সব সেনা প্রত্যাহার করা হবে।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

seven + 13 =

Back to top button