রাজনীতি

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের দক্ষতা ও সক্ষমতা সংসদে নিয়ে প্রশ্ন জি এম কাদেরের

স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের দক্ষতা ও সক্ষমতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন সংসদের বিরোধী দলীয় উপনেতা গোলাম মোহাম্মদ কাদের। চলতি ২০১৯-২০২০ অর্থবছরের বরাদ্দকৃত অর্থ খরচ করতে না পারায় তার এই প্রশ্ন।

তিনি বলেছেন, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় বাজেটে বরাদ্দকৃত অর্থ খরচ করতে পারে না। উন্নয়ন ব্যয় হ্রাস করা হয়, কাজেই এই মন্ত্রণালয়ের সক্ষমতা কতটুক রয়েছে এতেই পরিষ্কার। এই মন্ত্রণালয়ের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ প্রায়ই শুনতে পাই। কাজেই স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সক্ষমতা যাচাই করার জন্য উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন তদন্ত কমিটি গঠন করতে হবে।

সোমবার (১৫ জুন) সকালে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে একাদশ জাতীয় সংসদের ৮ম অধিবেশনে ২০২০-২০২১ অর্থবছরের সম্পূরক বাজেটের ওপর সাধারণ আলোচনায় অংশ নিয়ে তিনি একথা বলেন।

জি এম কাদের বলেন, ২০১৯-২০২০ অর্থবছরের বাজেটে ৫২ মন্ত্রণালয় ও বিভাগের অনুকূলে নিট ৫ লাখ ২৩ হাজার ১৯০ কোটি টাকা বরাদ্দ ছিল, সংশোধিত বাজেটে ২৬টি মন্ত্রণালয় ও বিভাগের বরাদ্দ ৪৬ হাজার ৫১৬ কোটি টাকা বৃদ্ধি পেয়েছে ও ৩৫টি মন্ত্রণালয় ও বিভাগের বরাদ্দ ১৮ হাজার ৩৫৩ দশমিক ৯৭ কোটি টাকা হ্রাস পেয়েছে। এবং একটি মন্ত্রণালয় ও বিভাগের বরাদ্দ অপরিবর্তিত রয়েছে। সার্বিকভাবে ২১ হাজার ৬১৩ কোটি টাকা হ্রাস পেয়ে সংশোধিত বরাদ্দ দাঁড়িয়েছে ৫ লাখ ১ হাজার ৫৭৭ কোটি টাকা।

তিনি বলেন, যেখানে যা দরকার সেটা করতে পারেনি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। কোনো মন্ত্রণালয় বা বিভাগ যখন প্রয়োজনীয় খরচ না করে তখন বোঝা যায় সেটা সক্ষমতার অভাব। সক্ষমতা নেই সেটাই বাস্তবতা। দায়িত্বশীলরা সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করছেন না। যখন যেভাবে হওয়ার দরকার সেভাবে হচ্ছে না। মোট ব্যয় কমলেও অপচয় রোধ হচ্ছে না। দুর্নীতি অনিয়ম লেগেই আছে।

কাদের বলেন, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সংশোধনী বাজেট নেই। তাদের বাজেট বরাদ্দের চেয়ে খরচ করা হয়েছে কম। এই মন্ত্রণালয়ে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছিল ২৫ হাজার ৭৫৩ কোটি টাকা, সংশোধিত বাজেটে ২৩ হাজার ৬৯২ কোটি টাকা। অর্থাৎ ২ হাজার ৪১ কোটি টাকা কমানো হয়েছে। সে কারণে ২০২০-২০২১ অর্থবছরের বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ২৯ হাজার ২৪৭ কোটি টাকা। সাড়ে ৩ হাজারের মতো গত বাজেটের চেয়ে বেশি। একটাই কারণ গতবারের বাজেট খরচ করতে পারেনি।

তিনি বলেন, সব মন্ত্রণালয়ের খরচ দুটি ভাগে বিভক্ত একটা পরিচালন ব্যয় একটা ‍উন্নয়ন ব্যয়। সবচেয়ে দুঃখের বিষয় উন্নয়ন ব্যয় সর্বক্ষেত্রেই কমানো হয়েছে। যেখানে হাসপাতাল বা অন্যান্য সেবা বাড়ানোর জন্য দরকার ছিল। ২০১৯-২০২০ অর্থবছরের উন্নয়ন ব্যয় প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকার মতো ছিল, সেখানে সংশোধিত করে করা হয়েছে ৭ হাজার ৬৬৭ কোটি টাকা। অর্থাৎ উন্নয়নের যে দরকার ছিল সেটা করা হয়নি। হাসপাতাল সুবিধা বাড়ানো হয়নি।

এসময় তিনি নিজ নির্বাচনী এলাকা লালমনিরহাট জেলা হাসপাতালের অব্যবস্থাপনার চিত্র তুলে ধরে বলেন, সেখানে ১০০ শয্যার হাসপাতালে যতগুলো ডাক্তারের দরকার তার সিংহভাগই খালি। এরকম চিত্র সারা দেশেই।

বিরোধী দলীয় উপনেতা বলেন, কোভিড-১৯ মোকাবিলায় সুস্পষ্ট নির্দেশনা না থাকলে অর্থ বরাদ্দ কতটুকু কার্যকর হবে সে সম্পর্কে সন্দেহ রয়েছে। কাজেই আমার প্রস্তাব নিরপেক্ষ এবং উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন তদন্ত কমিটি গঠন করে এই মন্ত্রণালয়ের অব্যবস্থাপনাগুলো খুঁজে বের করা দরকার।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

7 − 5 =

Back to top button