২০১৯-২০ অর্থবছরে জিডিপি প্রবৃদ্ধি ৫ দশমিক ২৪ শতাংশ
২০১৯-২০ অর্থবছরে করোনা মহামারির কারণে দেশে জিডিপির প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৫ দশমিক ২৪ শতাংশ। প্রবৃদ্ধির এ হার বিশ্বের অনেক উন্নত দেশের তুলনায় বেশি। প্রবাসী বাংলাদেশিদের পাঠানো রেমিট্যান্সের পরিমাণ আগের অর্থবছরের তুলনায় ১০ দশমিক ৮৭ শতাংশ বেড়েছে, যা সর্বকালের রেকর্ড ছাড়িয়েছে। এ সময় বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ দাঁড়িয়েছে ৩৬ দশমিক ০৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে। মহামারি সত্ত্বেও রাজস্ব আদায় হয়েছে ২ লাখ ৬২ হাজার ৮০৬ কোটি টাকা।
সোমবার (০২ নভেম্বর) মন্ত্রিসভার নিয়মিত বৈঠকে অর্থ মন্ত্রণালয় ও বিভাগগুলোর ২০১৯-২০ অর্থবছরের কার্যাবলির বিষয়ে উপস্থাপিত বার্ষিক প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভার বৈঠকে (ভার্চুয়াল) গণভবন প্রান্ত থেকে প্রধানমন্ত্রী এবং সচিবালয়ের মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রীরা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে অংশগ্রহণ করেন। বৈঠক শেষে সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ সভাকক্ষে সীমিত পরিসরে অনুষ্ঠিত প্রেস ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য জানান মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব জানান, ২০১৯-২০ অর্থবছরে মাদক নিয়ন্ত্রণে ৫৮ হাজার ৮৭৬টি অভিযানে ১৬ হাজার ১৭৮টি দায়ের করা মামলায় ১৭ হাজার ৪২ জন আসামির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়। কোভিড-১৯-এর অর্থনৈতিক প্রভাব মোকাবিলায় প্রধানমন্ত্রী এক লাখ ২০ হাজার ৫৩ কোটি টাকার একটি প্রণোদনা ও অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার প্যাকেজ ঘোষণা করেছেন, যা জিডিপির ৪ দশমিক ৩০ শতাংশ।
সচিব জানিয়েছেন, উপস্থাপিত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দেশের মোবাইল গ্রাহক সংখ্যা প্রায় ১৬ কোটি ১৫ লাখ এবং ইন্টারনেট গ্রাহক সংখ্যা প্রায় ১০ কোটি ২১ লাখে উন্নীত হয়েছে। টেলিডেনসিটি ৯৬ দশমিক ২৮ শতাংশে এবং ইন্টারনেট ডেনসিটি ৬০ দশমিক ৩৪ শতাংশে উন্নীত হয়েছে। দক্ষ, প্রযুক্তি জ্ঞানসম্পন্ন ও সচেতন মানবসম্পদ সৃষ্টির লক্ষ্যে প্রায় এক লাখ ৬১ হাজার ৬১৮ জনকে আইটি প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে।
গত ২০১৯-২০ অর্থবছর প্রাথমিক শিক্ষায় ছাত্রছাত্রীদের বিদ্যালয় থেকে ঝরে পড়ার হার ১৮ দশমিক ৬০ শতাংশ থেকে কমে ১৮ দশমিক ৫৫ শতাংশ হয়েছে। দেশে গড় সাক্ষরতার শতকরা হার ৭৪ দশমিক ৭ শতাংশ। কোভিড ডেডিকেটেড হাসপাতালগুলোয় সংক্রমিত রোগীদের জন্য ৭ হাজার ৬৩টি সাধারণ বেড, ২০২টি আইসিইউ এবং ৭৩টি ডায়ালাইসিস বেড, ১৮৬টি ভেন্টিলেটর, ৩ হাজার ৪৫৬টি অক্সিজেন সিলিন্ডার, ১০২ হাইক্লোনেজাল ক্যানোলা এবং ৯৮টি অক্সিজেন কনসেন্ট্রেটর ব্যবস্থা রাখা হয়েছে বলে জানিয়েছেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব।
সচিব জানান, ২০১৯-২০ অর্থবছরে দেশে দারিদ্র্যের হার কমে ২০ দশমিক ৫ শতাংশ এবং চরম দারিদ্র্যের হার ছিল ১০ দশমিক ৫ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। ২০১৮-১৯ অর্থবছরে দেশে দারিদ্র্যের হার ২১ দশমিক ৮ শতাংশ এবং চরম দারিদ্র্যের হার ছিল ১২ দশমিক ৯ শতাংশ। জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে আপামর জনগণের আর্থিক সহায়তার জন্য ‘বঙ্গবন্ধু সুরক্ষা বিমা’ চালু করা হয়েছে বলেও জানিয়েছেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম।