জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় ৪ হাজার ১৬৬ কোটি টাকার ১০টি প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে বৃহত্তর উত্তরাঞ্চল তথা বরং, নীলফামরী ও পীরগঞ্জ শহর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় গ্যাস বিতরণ পাইপ লাইন নির্মাণ’ প্রকল্পটিরও অনুমোদন দেয়া হয়েছে। একনেক সভা শেষে সাংবাদিকদের সামনে বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান।
জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের ‘রংপুর, নীলফামারী, পীরগঞ্জ শহর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় গ্যাস বিতরণ পাইপলাইন নেটওয়ার্ক নির্মাণ’ প্রকল্পটি ২৫৮ কোটি ১১ লাখ টাকা খরচে অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। প্রকল্পটি ২০২১ সালের জুলাই থেকে ২০২৩ সালের ডিসেম্বর মেয়াদে বাস্তবায়ন করা হবে।
জ্বালানি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, দেশের উত্তরাঞ্চলে শিল্প-কারখানায় গ্যাস সংযোগসহ অর্থনৈতিক ও মানুষের জীবন মান উন্নয়নে ২০১৮ সালে বগুড়া-রংপুর-সৈয়দপুর সৈয়দপুর সঞ্চালন পাইপলাইন স্থাপন প্রকল্প হাতে নেয় সরকার। চলতি বছরের জুনে এই প্রকল্প শেষ হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু ভূমি অধিগ্রহণ জটিলতার পাশাপাশি পাইপলাইন স্থাপনে নদী ক্রসিং জটিলতায় সেই কাজে দীর্ঘসূত্রিতা দেখা দেয়। এর মধ্যে করোনাভাইরাসের সংক্রমণে কাজ বন্ধও ছিল দীর্ঘ দিন। ফলে প্রকল্পটির কাজ নির্ধারিত সময়ে শেষ করতে পারছে না পেট্রোবাংলার অধীন গ্যাস ট্রান্সমিশন কোম্পানি লিমিটেড (জিটিসিএল)।
পরিকল্পনা অনুযায়ী, বগুড়া থেকে রংপুর হয়ে সৈয়দপুর ৩০ ইঞ্চি ব্যাসের ১৫০ কিলোমিটার দীর্ঘ ১ হাজার পিএসআইজি চাপ সহনীয় গ্যাস সঞ্চালন পাইপলাইন স্থাপন করা হবে। এই প্রকল্পের মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ১ হাজার ৩৭৮ কোটি ৫৫ লাখ টাকা। এ প্রকল্প বাস্তবায়নে গ্যাস সঞ্চালন পাইপলাইন নির্মাণের জন্য মোট ৫৭৬ একর জমির প্রয়োজন। এরই মধ্যে বগুড়া, রংপুর, গাইবান্ধা ও নীলফামারী— এই চার জেলায় ৩০৫ একর জমি অধিগ্রহণের কাজ শেষ হয়েছে। রংপুর, গাইবান্ধা ও নীলফামারী জেলায় বাকি জমি অধিগ্রহণের কাজ এখনো চলছে বলে জানা যায়।
এছাড়া এ প্রকল্পে নদী ও খাল ক্রসিং রয়েছে। মোট ১০ দশমিক ৭৭ কিলোমিটার নদী ও খাল ক্রসিং করে পাইপলাইন নির্মাণ করা হবে। আর সেজন্য ৪৩৬ একর ৮৭ শতক জমি অধিগ্রহণ করা হবে। মূল পাইপলাইন অংশে ছয়টি নদী ও দু’টি খাল রয়েছে, যার দৈর্ঘ্য আড়াই কিলোমিটার।