৫ বছরে দ্বিগুণ হয়েছে ইলিশের উৎপাদন
অভয়াশ্রমগুলোতে জাটকা ধরা বন্ধ করা এবং নিষিদ্ধ সময়ে মা ইলিশ ধরা বন্ধ করার কারণে ধারাবাহিকভাবে দেশে ইলিশের উৎপাদন লক্ষনীয়ভাবে বেড়েছে ।
পরিসংখ্যান বলছে, ২০০৮-০৯ অর্থ বছরে দেশে উৎপাদিত ইলিশের পরিমাণ ছিল ২.৯৮ লাখ মেট্রিক টন। নানা পদক্ষেপের পর ধারাবাহিকভাবে বাড়ছে ইলিশ উৎপাদন। ২০১৪-১৫ অর্থ বছরে ইলিশ ধরা হয়েছিল ৩ লাখ ৮৭ হাজার মেট্রিক টন। ২০১৮-১৯ অর্থ বছরে এর পরিমান দাঁড়িয়েছে ৫ লাখ ৩৩ হাজার মেট্রিক টন।
প্রতিবছরই বাড়ছে জাতীয় এই মাছ আহরণের পরিমান। শেষ ৫ বছরে পৌঁছেছে প্রায় দ্বিগুণ অবস্থানে।
এবছর আগামী ১৪ অক্টোবর থেকে ৪ নভেম্বর ২২ দিন ইলিশ প্রজনন ক্ষেত্রে ইলিশসহ সব ধরনের মৎস্য আহরণ বন্ধ হচ্ছে। মৎস্য অধিদপ্তরের ইলিশ ব্যবস্থাপনা শাখার এক কর্মকর্তা বলেন, এসময় দেশব্যাপী ইলিশ আহরণ, বিপণন, পরিবহন, ক্রয়-বিক্রয়, বিনিময় এবং মজুতও নিষিদ্ধ থাকবে।
গেল কয়েক বছরে এই নিষেধাজ্ঞা কঠোরভাবে পালন করার ফল পাওয়া গেছে ইলিশের উৎপাদনে। সরকার তাই এ ব্যাপারে সর্বোচ্চ কঠোরতা অবলম্বন করতে চায়।
সরকারের দিক থেকে এ বিষয়ে জেলেদের মধ্যে সচেতনতা বাড়ানোর জন্য উদ্দীপনামূলক প্রচারাভিযান চালানো হবে। নিষিদ্ধ সময়ে মা ইলিশ ধরা ঠেকাতে প্রশাসনিক পদক্ষেপ নেওয়ার পাশাপাশি জেলেদেরও মানসিকভাবে এই কার্যক্রমে যুক্ত করে উপকূলীয় এলাকায় প্রচারকাজ চালানো হবে, যাতে জেলেরা নিজেরাই নিষিদ্ধ সময়ে মাছ ধরা থেকে স্বতঃস্ফূর্তভাবে বিরত থাকবেন।
মৎস্যবিষয়ক আন্তর্জাতিক সংস্থা ওয়ার্ল্ডফিস দুই দিন ব্যাপী একটি গবেষণা সম্পন্ন করেছে গত ৯ ও ১০ সেপ্টেম্বর । সেখানে দেখানো হয়েছে, বর্তমানে সারা পৃথিবীতে যে পরিমাণ ইলিশ উৎপাদন করা হয়, তার ৮৬ শতাংশই হচ্ছে বাংলাদেশে।
অথচ ৪ বছর আগেও এই হার ছিল ৬৫ শতাংশ। বাংলাদেশে ইলিশ উৎপাদনের হার যেমন বাড়ছে তেমনি কমছে অন্য দেশগুলোতে।
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম বলেন, সরকারের নানামুখী উদ্যোগের ফলেই এমন সুখবর পাওয়া যাচ্ছে।
ইলিশের জন্য অভয়াশ্রম বাড়ানো হয়েছে। জাটকা ধরা নিষিদ্ধ করা হয়েছে আরো কড়াকড়িভাবে। তাছাড়া বিভিন্ন সুরক্ষা ব্যবস্থার কারণে ইলিশ ধরা পড়ছে তুলনামূলক বড় সাইজের। আমরা আশা করি, ইলিশের উৎপাদন উত্তরোত্তর বাড়তে থাকবে।